ঋতু পরিবর্তনে বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার
ঋতু পরিবর্তনে বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার এই আর্টিকেলে আমরা জানবো ঋতু পরিবর্তনে রোগ কিভাবে হয় ও কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়। এ দেশে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে কিছু সাধারণ রোগ মানুষের মাঝে দেখা যায়। তাই এই বিষয়ে সতর্ক থাকা অনেক জরুরি।
কিছু সতর্কতা আছে যেগুলো মেনে চললে ঐ সকল রোগ থেকে মুক্তি মেলে। বিশেষ কিছু নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে থাকলে ঐ সকল রোগ না হওয়ার সম্ভাবোনা বেশি। তাই এই আর্টিকেলটি আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়বেন বলে আমি আশা করি।
সূচিপত্রঃ ঋতু পরিবর্তনে বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার
ঋতু পরিবর্তনে বিভিন্ন রোগ
ঋতু পরিবর্তনে বিভিন্ন রোগ দেখা যায়। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ হওয়ায় এই দেশে দুই মাস পর পর আবহাওয়া পরিবর্তন হয়। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের কারণে আমাদের দেশে সিজিনাল কিছু রোগ দেখা দেয়। এ সকল রোগ প্রায় সব বয়সের মানুষের হয়ে থাকে। ঋতু পরিবর্তনে রোগের মধ্যে বেশ কিছু রোগ পরিলক্ষিত হয়। এর মধ্যে কয়েকটি হলো যেমন সর্দি-কাশি, এ্যাজমা, হাপানি, শ্বাসকষ্ট
জ্বর, মাথা ব্যাথা, গলা ব্যাথা প্রভৃতি।
এছাড়া আরও বিভিন্ন রোগ দেখা যায়। যেমন চুলকানি বা এ্যালার্জি, হাঁটু ব্যাথা, মাথা ঘোরা, পাতলা পায়খানা। এ সকল সাধারণ রোগ থেকে বাঁচতে আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত। ঋতু পরিবর্তনে বিভিন্ন এই রোগ গুলো সম্পর্কে জানা থাকলে আমাদের এই রোগ থেকে আমরা নিজেরাই তা প্রতিহত করতে পারবো।
মাঝে মধ্যে এই রোগ গুলো অনেক প্রকোপ আকার ধারণ করতে পারে। তাই আমাদের আগে থেকেই সতর্ক থাকা উচিত। রোগ সম্পর্কে জেনে বুঝে থাকলে ও অল্পতেই চিকিৎসা নিলে ঋতু পরিবর্তনে এই রোগ থেকে বাঁচা সম্ভব।
ঋতু পরিবর্তনে রোগের প্রকোপ
ঋতু পরিবর্তনে রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। এ সময় মানুষের মাঝে বিভিন্ন রোগ দেখা যায়। ঋতু পরিবর্তনের ফলে যে রোগের প্রকোপ দেখা যায় তা সাধারণত সাধারণ রোগব্যাধি নামে পরিচিত। জ্বর, সর্দি, কাশি এ সকল রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। বিভিন্ন বয়সের মানুষের ঋতু পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রকোপ দেখা যায়।
এর মধ্যে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রোগ হচ্ছে সর্দি, কাশি, জ্বর, চিকেন ফক্স, আচমকা ঠান্ডা লাগা, ফুসফুসের সর্দি জমি নিউমোনিয়া হতে পারে। এ সকল রোগ বেশি প্রকোপ ধারণ করে। এ সময় বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধ অসুস্থায় বেশি পরে। এ সকল রোগের প্রকোপ এড়াতে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
ঋতু পরিবর্তনে সাধারণ রোগ
ঋতু পরিবর্তনে সাধারণ রোগ বেশি দেখা যায়। বাংলাদেশের প্রত্যেক ঋতু পরিবর্তনের বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা যায়। তবে একাক ঋতুতে এক এক রকম রোগের লক্ষণ দেখা যায়। প্রত্যেক ঋতু পরিবর্তনের সময় প্রায় কম বেশি সব বয়সের মানুষের মাঝেই সাধারণ রোগ পরিলক্ষিত হয়। যেহেতু বাংলাদেশে দুই মাস পরপর পরিবর্তন হয় সে কারণে সাধারণ রোগ গুলো বেশি দেখা যায়।
বাংলাদেশের প্রতিটি ঋতুবর্তনের পর এক ভিন্ন রোগ দেখা যায়। যেমন বসন্তের সময় জল বসন্ত আবার গ্রীষ্মের সময় অতিরিক্ত ধুলাবালিতে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। আবার ঠান্ডার সময় যাদের হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের লক্ষণ রয়েছে তারা নিউমোনিয়া সহ বংকাইটিস এ ধরনের রোগে ভোগে। এ সকল সাধারণ রোগ গুলো সঠিক চিকিৎসা সময়মতো না পেলে অনেক বড় আকার ধারণ করতে পারে।
ঋতু পরিবর্তনে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ
ঋতু পরিবর্তনে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। ঋতু পরিবর্তনে অন্যতম রোগ জ্বর যা সব ঋতুতের পরিবর্তনে দেখা দেয়।জ্বরের কিছু প্রাথমিক লক্ষণ রয়েছে এগুলো হলো হঠাৎ করে শরীর ব্যথা হওয়া শুরু করবে। নাকমুক কামড়ানোর মতন লাগবে। শরীরে একটা ঝিমঝিম ভাব আসবে। আবার শীত ব্যতীত গরমে ঠান্ডা লাগার অনুভূতি হবে।
ঋতু পরিবর্তনের বিভিন্ন রোগের মধ্যে আরেকটি উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সর্দি কাশি। এই সর্দি কাশি হওয়ার আগে হঠাৎ করে মাথা ব্যথা, নাক কামড়ানো, যাদের কোল্ড এলার্জি আছে নাক দিয়ে পানি পড়া। বেশি ঠান্ডা লাগলে বুকে ব্যথা হতে পারে। এছাড়া আরেকটি রোগের বেশ লক্ষণ দেখা যায়। রোগটি হল পক্স বা চিকেন পক্স।
চিকেন পক্সের বা পক্সের বেশ কিছু লক্ষণ দেখা যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য লক্ষণ গুলো হল- শরীর হাত পা ব্যথা হওয়া।প্রচন্ড জ্বর হওয়া শরীরের বেশ কিছু জায়গা ফুলে যাওয়া। এ রোগটি সাধারণত বসন্তকালে দেখা যায় একে বসন্ত রোগও বলে।
রোগ সম্পর্কে জানা
রোগ সম্পর্কে জানা ঋতু পরিবর্তনের বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রোগ সম্পর্কে ধারণা থাকলে অনেকটাই রোগের বিভিন্ন আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তাছাড়া রোগ সম্পর্কে জানা থাকলে খুব তাড়াতাড়ি চিকিৎসা গ্রহণ করা যায় এবং বিভিন্ন দুশ্চিন্তা থেকে নিজের মুক্তি মেলে। তাই প্রতিটি মানুষের এ সকল সাধারণ রোগ সম্পর্কে জানা উচিত।
মানুষ যদি এ সকল রোগ সম্পর্কে জানে বা বুঝে, তাহলে এ সকল রোগের খুব প্রকোপ এড়ানো সম্ভব।তাই আমাদের উচিত প্রতিটি মানুষকে রোগ সম্পর্কে সাধারণ ধারণা দেওয়া। যেন প্রতিটি মানুষ রোগ সম্পর্কে একটি সুষ্ঠু ধারণা লাভ করে এবং সুচিকিৎসা নিতে পারে।
রোগ থেকে সতর্ক থাকা
রোগ থেকে সতর্ক থাকা ঋতু পরিবর্তনের বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যখন কোন রোগীর কোন রোগ হয় তখন সেই রোগ থেকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। রোগ সম্পর্কে জানা না থাকলে সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সবসময় খেয়াল রাখতে হবে যেন কোন ধরনের ছোঁয়াচে রোগ অন্য কোন মানুষের মাঝে না ছাড়ায়।
রোগ থেকে সতর্ক থাকলে ঋতু পরিবর্তনে বিভিন্ন রোগ এড়ানো যায়। অর্থাৎ আপনার যদি রোগ হয় এবং সেই বিষয়ে যদি আপনার জানা থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই সতর্ক থাকবেন যেন অন্য কারো না হয়।এবং খুব গুরুতর হওয়ার আগেই চিকিৎসার পরামর্শ নিবেন। তাই রোগ থেকে সতর্ক থাকা প্রত্যেকটি মানুষের একান্ত দায়িত্ব-কর্তব্য বলে আমি মনে করি।
কিভাবে রোগ প্রতিরোধ করা যায়
কিভাবে রোগ প্রতিরোধ করা যায় এখানে আমরা জানবো সাধারণ রোগ গুলো কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়। ঋতু পরিবর্তনে বিভিন্ন রোগ হতে পারে এটি একটি সাধারণ বিষয়। তবে এই রোগ প্রতিরোধ করতে আমাদের বেশ কিছু নিয়ম-শৃঙ্খলার ভেতর থাকতে হবে। এবং পরবর্তী প্রজন্মকে সচেতন করে তুলতে হবে। যেন খুব সহজেই রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
ঋতু পরিবর্তনে রোগের মধ্যে প্রথমে আমাদের নিজে শরীরের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত। কোন কিছু ঘটার আগেই সতর্ক থাকা উচিত। সবসময় নিজের শরীরের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। ঋতু পরিবর্তনের রোগ সম্পর্কে জানা থাকলে তা প্রতিরোধ করা অবশ্যই অনেক সাধ্য ব্যাপার। বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে বাঁচতে হলে প্রথমে শরীরের যত্ন নিতে হবে।
সাধারণ রোগ গুলো প্রতিরোধ করতে আমাদের বাড়ির আশেপাশে টায়ার, নারকেলের খোসা, দধির পাত্র, ফুলের টবে, পানি জমা থাকলে সেগুলো ফেলে দিতে হবে। এতে করে দেখা যাবে যে ডেঙ্গু জ্বর হয় এটা থেকে অনেকাংশেই পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। কেননা ডেঙ্গু জ্বর হয় এ সকল কম পানির জমে থাকা উৎস থেকে।
সর্দি কাশি থেকেও পরিত্রাণ বা প্রতিরোধ করা যায়। সাধারণত সর্দি কাশির যে লক্ষণ গুলো দেখা যায় তা জানা থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিলে খুব সহজে প্রতিরোধ করা যায়। এমন ঋতু পরিবর্তনেঋতু পরিবর্তনে রোগের প্রতিরোধ করা যায় নিজে যদি আগে থেকেই সতর্ক হওয়া যায়।
ঋতু পরিবর্তনে স্বাস্থ্য সচেতনতা
ঋতু পরিবর্তনে স্বাস্থ্য সচেতনতা একটি জরুরী বিষয়। জানা যদি স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া যায় তাহলে অনেক রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই সবার আগে স্বাস্থ্য সচেতনতা অনেক জরুরী।গ্রামের মানুষ বেশিরভাগ অশিক্ষিত থাকায় স্বাস্থ্য সচেতন সম্পর্কে অনেক উদাসীন। তাই আমাদের তাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা নিশ্চিত করতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
গ্রাম বা শহরে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন ধরনের গণসংযোগ মূলক কাজ করতে হবে। বিভিন্ন সেমিনারে স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাখতে হবে ঋতু পরিবর্তনে বিভিন্ন রূপ। ঋতু পরিবর্তনের বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার সম্পর্কে প্রত্যেকটি মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে।
প্রয়োজন হলে প্রতিটি গ্রাম মহল্লায় বা শহরে বিভিন্ন গণমাধ্যম দ্বারা সবাইকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। বিভিন্ন মঞ্চনাটক থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে সবাইকে ঋতু পরিবর্তনের রোগ সম্পর্কে স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। যেন প্রতিটি মানুষ নিরাপদ ভাবে বেঁচে থাকতে পারে। সবাইকে ডাক্তারের সুচিকিৎসা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিতে হবে।
শেষ কথা
পরিশেষে বলা যায় ঋতু পরিবর্তনের বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকার এ বিষয়ে আমাদের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হওয়া এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া। এছাড়া বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে সঠিক ধারণা লাভ ও রোগ সম্পর্কে রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জানা খুব জরুরী বিষয়।
প্রত্যেকটি মানুষের উচিত রোগ থেকে সতর্ক থাকা। রোগ প্রতিরোধ করা যায় এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আশেপাশের পরিবেশ সুন্দর ও নির্মল রাখা। ময়লা আবর্জানা থেকে পরিবেশকে হেফাজত করা।
জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url