আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি
আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি এই আর্টিকেলে এখন আমরা সার প্রয়োগ বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। আম গাছ একটি দীর্ঘজীবী ও ফলদায়ক গাছ, এই গাছে সঠিক পুষ্টি সরবরাহের জন্য নিয়মিত স্যারের প্রয়োজন হয়।
বিশেষ করে যখন ফুল ফোটে এবং ফল গঠনের সময় এবং শীতের আগে আমগাছকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়গুলোতে সঠিকভাবে সার প্রয়োগের মাধ্যমে গাছের স্বাস্থ্য ও ফলনের মান বাড়ানো যায়।
পেজ সূচিপত্রঃ আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি
আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি
আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি এই আর্টিকেলে এখন আমরা জানবো আম গাছে কিভাবে সার প্রয়োগ করতে হবে তার সকল পদ্ধতি সম্পর্কে। আম গাছের বৃদ্ধি ও ফলন এবং গুনগতমান উন্নত করার জন্য সঠিকভাবে সার প্রয়োগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সার প্রয়োগ করার সঠিক পদ্ধতি এবং পরিমাণ নির্ভর করে গাছের বয়স, মাটি এবং এলাকার আবহাওয়ার উপর। এই প্রবন্ধে আমরা আম গাছের সার প্রয়োগ করার সঠিক পদ্ধতি, সময় এবং বিভিন্ন ধরনের সার নিয়ে আলোচনা করবো।
আম গাছের পুষ্টি চাহিদা
এখন আমরা আম গাছের পুষ্টি সম্পর্কে জানবো। অর্থাৎ আম গাছে কি কি পুষ্টি চাহিদা আছে সে বিষয়গুলো জানবো। নিম্মে আম গাছের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানগুলো উল্লেখ করা হলো-
- নাইট্রোজেনঃ পাতা এবং ডালের বৃদ্ধির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- পটাশিয়ামঃ ফলের আকার এবং স্বাদ উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে।
- ফসফরাসঃ শিকড় এবং ফুলের উন্নতির জন্য অতি প্রয়োজন।
- অন্যান্য উপাদান সমূহঃ ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সালফার এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যেমন দস্তা ও বোরন।
আরও পড়ুনঃ পেঁপে গাছের পাতা হলুদ হলে করণীয়
আম গাছে সার প্রয়োগের উপযুক্ত সময়
আম গাছে সার প্রয়োগের উপযুক্ত সময় আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি এই আর্টিকেলে এখন আমরা এই বিষয়টি সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। নিম্নে এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ উল্লেখ করা হলো-
আম গাছের সার প্রয়োগের জন্য তিনটি প্রধান সময় রয়েছেঃ
প্রথম বার (ফলন শুরু করার আগে )
শীতের শেষে বা বসন্তের শুরুতে সার প্রয়োগ করতে হবে।
দ্বিতীয় বার (ফুল ফোটার সময়)
গ্রীষ্মের শুরুর দিকে সার প্রয়োগ করতে হবে।
তৃতীয়বার (ফল পরিপক্ক হওয়ার আগে)
বর্ষাকালে ফল পরিপক্ক হওয়ার আগে সার প্রয়োগ করতে হবে।
আম গাছে সার প্রয়োগের ধাপসমূহ
আম গাছে সার প্রয়োগের ধাপসমূহ আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি এই প্রবন্ধে আমরা এই সার প্রয়োগের ধাপসমূহ বিস্তারিত তুলে ধরবো। নিম্নে আম গাছে সার প্রয়োগের ধাপসমূহ বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরা হলো-
গাছের বয়স বিবেচনা করে গাছের বয়স অনুযায়ী সারের পরিমাণ পরিবর্তন করা হয়।
এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী গাছ
৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম নাইট্রোজেন, ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ফসফরাস এবং ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম পটাশিয়াম।
৬ থেকে ১০ বছর বয়সী গাছ
৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম নাইট্রোজেন, ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ফসফরাস এবং ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম পটাশিয়াম।
১০ বছরের বেশি বয়সী গাছ
৮০০ থেকে ১০০০ গ্রাম নাইট্রোজেন, ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ফসফরাস এবং ৮০০ থেকে ১০০০ গ্রাম পটাশিয়াম।
সেচ দেওয়া
সার প্রয়োগের পর গাছকে অবশ্যই পানি দিতে হবে, যাতে সার মাটির সাথে মিশে যায় এবং শিকড়ের মধ্যে ভালোভাবে প্রবেশ করতে পারে।
সার মাটিতে প্রয়োগ করা
গাছের ছায়া বিস্তারের সীমানা অনুযায়ী মাটি কেটে সার ছিটিয়ে দিতে হবে।
আম গাছে বিভিন্ন ধরণের সার এবং এর ব্যবহার
আম গাছে বিভিন্ন ধরণের সার এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে এখন আমরা জেনে নিব। আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি এই আর্টিকেলে এখন এই বিষয়টি আপনাদের মাঝে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করবো।নিম্নে এ বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো-
রাসায়নিক সার (ইউরিয়া, ডিএপি)
এই সার দ্রুত ফলাফল দেয় তবে পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত। কারণ অতিরিক্ত রাসায়নিক সার মাটির ক্ষতি করতে পারে।
জৈব সার (কম্পোস্ট, গোবর)
মাটির গঠন উন্নত করে এবং মাটিতে মাইক্রো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।
ফলন বৃদ্ধির জন্য বিশেষ সার
এটি উদ্ভিজ্জ হরমোন এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যুক্ত সার, যা ফলের আকার এবং স্বাদ উন্নত করে।
আম গাছে সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতা
আম গাছে সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কেননা সার প্রয়োগে অসাবধানতা হলে গাছের নানাবিধ ক্ষতি হতে পারে। তাই সার প্রয়োগের ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি এই আর্টিকেলে এখন আমরা এ বিষয়টি জেনে নিব।
- গাছের বয়স, মাটির গুণগতমান এবং স্থানীয় আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে সার প্রয়োগের সময় এবং পরিমাণ পরিবর্তন করা উচিত।
- অতিরিক্ত রাসায়নিক সার প্রয়োগ থেকে বিরত থাকা অতীব প্রয়োজন। কারণ এটি মাটির উর্বরতা নষ্ট করে থাকে।
- সঠিকভাবে মাপ ও নিয়ম অনুসারে সার প্রয়োগ করলে গাছের ফলন ও স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
শেষ কথা
পরিশেষে বলা যায় যে, আম গাছের সঠিক পদ্ধতিতে সার প্রয়োগের মাধ্যমে উন্নত ফল পাওয়া সম্ভব। গাছের বয়স, পুষ্টি চাহিদা, এবং মাটির গুণগতমান অনুযায়ী সার প্রয়োগের পরিকল্পনা করলে সুস্থ এবং নিয়মিত ভালো মানের ফল পাওয়া যায়।
সঠিক সার প্রয়োগ করে আপনার আম গাছকে বেশি ফলদারি করতে চাইলে এই পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করে চলতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় যত্ন নিতে পারেন। মাটির সঠিক সময় স্যার প্রয়োগ করা এক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে।
Onak Valo akta post...... Sokoler kaj a lagba....
আম গাছে সার প্রয়োগ পদ্ধতি এই আর্টিকেলে ভালো কমেন্ট করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ