কোন ফেসিয়াল করে ফর্সা হয় - মুখ ফেসিয়াল করার ক্রিম

কোন ফেসিয়াল করে ফর্সা হয় এই আর্টিকেলে আপনারা ফেসিয়াল করার সব ধরনের বিষয়টি বিস্তারিত জানতে পারবেন।এছাড়া মুখ ফেসিয়াল করার ক্রিম সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং কোন ক্রিম গুলো ভালো সে বিষয়ে সম্পর্কে জানতে পারবেন।

কোন-ফেসিয়াল-করে-ফর্সা-হয়ফেসিয়াল করলে ত্বক ভালো থাকে কিন্তু ত্বক ফর্সা করেনা। তবে ত্বকের স্বাস্থ্য উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি হয় অর্থাৎ ত্বক সুন্দর দেখায় কোমল ও মসৃণ হয়। ত্বক যখন স্বাস্থ্যজ্জ্বল ও মসৃণ হয় তখন ত্বক দেখতে ফর্সার মত মনে হয়।

সূচিপত্রঃ কোন ফেসিয়াল করে ফর্সা হয় - মুখ ফেসিয়াল করার ক্রিম

কোন ফেসিয়াল করে ফর্সা হয়

কোন ফেসিয়াল করে ফর্সা হয় এই আর্টিকেলে আমরা জানবো কোন ফেসিয়াল করলে ত্বক ফর্সা হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত। ফেসিয়াল সাধারণত সরাসরি ত্বকের রং ফর্সা করেনা বা রং ফর্সা করার কোন প্রমাণিত উপায় নয় তবে কিছু ফেসিয়াল ত্বককে উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যবান দেখায়। নিম্নে কয়েকটি জনপ্রিয় ফেসিয়াল রয়েছে যা আপনাদের মাঝে উল্লেখ করা হলো।

ব্রাইট্রেনিং ফেসিয়াল

এ ধরনের ফেসিয়ালে এমন উপাদান ব্যবহৃত হয়, যা ত্বককে উজ্জল করতে সাহায্য করে থাকে। এর মধ্যে থাকা পেপাটাইড, আয়ুর্বেদিক উপাদান বা কেমিক্যাল পিল ত্বকের মেলানিন উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে।

ভিটামিন সি ফেসিয়াল

ভিটামিন সি ফেসিয়াল ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, এবং হাইপারপিগমেন্টেশন কমায়। এটি এন্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা ত্বকের ক্ষতি মেরামত করতে পারে, সেই সাথে ত্বকের স্বাভাবিক রং ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।

কেমিক্যাল পিল ফেসিয়াল

কেমিক্যাল পিল ফেসিয়াল সাধারণত  (এ এইচ এ)- আলফা হাইড্রোক্সি এ্যাসিড এবং (বি এইচ এ)- বেটা হাইড্রোক্সি এ্যাসিড ব্যবহৃত হয়। এটি ত্বকের উপরের স্তরের মরা কোষ তুলে ফেলে এবং নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে। যার ফলে ত্বক আরো উজ্জ্বল ও মসৃণ দেখায়।

গোল্ড ফেসিয়াল

এই গোল্ড ফেসিয়াল ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, যাতে ত্বক দীপ্তময় ও উজ্জ্বল হয়। এটি মূলত ত্বকের টোন উন্নত করতে সাহায্য করে। এছড়া ত্বকের মরা কোষ দূর করে, যার ফলে ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফুটে ওঠে।

অক্সিজেন ফেসিয়াল

অক্সিজেন ফেসিয়াল এমন একটি ফেসিয়াল যা ত্বকের কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং ত্বকের প্রাণবন্ত বাড়ায়। এটি ত্বকের রং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে স্বাস্থ্যবান দেখাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

পাপায়া ফেসিয়াল

পাপায়াতে প্যাপেইন নামক এক ধরনের এনজাইম থাকে, যা ত্বকের মরা কোষ দূর করতে সাহায্য করে।এটি ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে পারে এবং রং ফর্সা করার পরবর্তীতে উজ্জ্বলতা বাড়াতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

ত্বকের যত্নে যেকোনো ফেসিয়াল করার আগে আপনার ত্বকের ধর্ম অনুযায়ী উপযুক্ত পদ্ধতি বেছে নেওয়া জরুরী বিষয়। আপনি কোনো ফেসিয়াল করার আগে একজন ডার্মাটোলজিস্ট বা বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নেবেন।

মুখ ফেসিয়াল করার ক্রিম

মুখ ফেসিয়াল করার ক্রিম, মুখ ফেসিয়ালের জন্য নানা ধরনের ক্রিম বাজারে পাওয়া যায় যা ত্বকের বিভিন্ন ধরন এবং সমস্যার উপর ভিত্তি করে ব্যবহার করা হয়। ফেসিয়াল করার সময় যেসব ক্রিম সাধারণত ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু বর্ণনা করা হলো।

ক্লিনজিং ক্রিম

ফেসিয়াল এর প্রথম ধাপ হচ্ছে মুখ পরিষ্কার করা। ক্লিনজিং ক্রিম মুখের ময়লা, তেল এবং ধুলা দূর করতে সাহায্য করে থাকে। এটি ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করে থাকে এবং ফেসিয়ালের জন্য প্রস্তুত করে।

স্কাবিং ক্রিম

স্কাবিং ক্রিম সাধারণত ব্যবহার করা হয় ত্বকের মৃত কোষ গুলো সারানোর জন্য। এটি মূলত ত্বকের রুক্ষতা কমায় এবং নতুন কোষ উৎপাদনে সহায়তা করে। স্কাবিং এর ফলে ত্বক উজ্জ্বল এবং মসৃণ হয়।

ম্যাসাজ ক্রিম

ম্যাসাজ ক্রিম ত্বকে ভালোভাবে শোষিত  হয় এবং ত্বককে মসৃণ করে তোলে। মুখের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

মাস্ক ক্রিম

মুখে ফেসিয়াল মাস্ক লাগানোর জন্য মাস্ক ক্রিম ব্যবহার হয়ে থাকে। এটি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে, পুষ্টি যোগায়, এবং ত্বককে পুনর্জীবিত করে থাকে। মাস্ক ক্রিম বিভিন্ন ধরনের হয় যেমন- হাইড্রেটিং, ক্লিনজিং বা রেডিয়েন্স বুস্টিং।

ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম

এটি ফেসিয়ালের শেষে করা হয়। ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ব্যবহার করা হয় ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে এবং ত্বককে নরম কোমল ও উজ্জ্বল রাখে।

কিছু জনপ্রিয় ব্যান্ডের মুখ ফেসিয়াল ক্রিম

  • হিমালিয়া (Himalaya)
  • নিভিয়া (Nivea)
  • ওলয়ে (Olay)
  • বায়োটিক (Biotique)
  • লরিয়াল প্যারিস (Loreal Paris)

আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্রিম নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।আপনার ত্বক যদি শুষ্ক হয় তবে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম বেশি উপকার হবে। আর যদি আপনার ত্বক তৈলাক্ত হয় তবে ক্লিনজিং ও মাস্ক ক্রিম ভালো ফলাফল দেবে।

ব্রণের জন্য কোন ফেসিয়াল ভালো

ব্রণের জন্য কোন ফেসিয়াল ভালো এখন আমরা এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিব। চলুন জেনে নিই ফেসিয়াল নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি যা ব্রণের জন্য ভালো হয়। নিম্নে ব্রণের সমস্যা কমাতে কার্যকরী হতে পারে এমন কয়েকটি ফেসিয়ালের কথা উল্লেখ করা হলো।

ওয়েল কন্ট্রোল ফেসিয়াল

এ জাতীয় ফেসিয়াল বিশেষভাবে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কার্যকারী। এই ফেসিয়াল করলে ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল অপসারণ করে যা ব্রণের অন্যতম কারণ। এতে হালকা ক্লিনজার, এন্টি একনে টোনার এবং ওয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

এন্টি একনে ফেসিয়াল

এন্টি একনে ফেসিয়াল ব্রণ প্রতিরোধী উপাদান যেমন, স্যালিসিলিক এ্যাসিড, বেনজয়েল পারক্সাইড, বা ট্রি-ট্রি ওয়েল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এগুলো ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমাতে সাহায্য করে থাকে, যা ব্রণ সৃষ্টি করে।

হাইড্রা ফেসিয়াল 

এই ফেসিয়াল ত্বকের গভীরে গিয়ে ময়লা তোলে, এছাড়া তেল, মৃত কোষ বের করে ত্বককে হাইড্রেট করে। এটি ব্রণ কমাতে ও ত্বক উজ্জ্বল করতে কার্যকারী।

ক্লে মাস্ক ফেসিয়াল

এই ফেসিয়ালটি মাটি দিয়ে তৈরী একটি ফেসিয়াল। এটি ত্বকের গভীরে গিয়ে তেল, ময়লা শোষণ করে, যার ফলে ত্বক পরিষ্কার ও ব্রণের পরিমাণ কমায়। বিশেষ করে বেন্টানাইট ক্লে, কাওলিন ক্লে ব্রণের জন্য অনেক কার্যকারী।

মেডিকাল ফেসিয়াল

এই ফেসিয়ালটি ডার্মাটোলজিস্ট দ্বারা কারানো হয়। যাদের ত্বকে প্রচুর ব্রণের সমস্যা আছে, তাদের জন্য এই ফেসিয়ালটি করা অনেক ভালো। এতে বিভিন্ন লেজার ট্রিট্মেন্ট ও ঔষুধি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যা দ্রুত ফল দেয়।

এ্যালোভেরা ফেসিয়াল

এ্যালোভেরা ফেসিয়াল ত্বকের প্রদাহ কমাতে এবং ব্রণের কারণে সৃষ্ট রেডনেস দূর করতে সাহায্য করে। এটি ত্বককে শান্ত করে ও ময়েশ্চারাইজিং করে।

আরও পড়ুনঃ পাউডার দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ঘরোয়া ফেসিয়াল

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ঘরোয়া ফেসিয়াল, তৈলাক্ত ত্বকে বিশেষ যত্নের প্রয়োজন পড়ে। কারণ এতে প্রায় অতিরিক্ত তেল উৎপাদনের কারণে ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যার সৃষ্টি হয়। ঘরোয়া ফেসিয়াল ত্বকের যত্নের একটি সহজ এবং প্রাকৃতিক উপায়। যেগুলো তৈলাক্ত ত্বকের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। নিম্নে ত্বকের জন্য ঘরোয়া ফেসিয়াল আলোচনা করা হলো।
তৈলাক্ত-ত্বকের-জন্য-ঘরোয়া-ফেসিয়াল
এর কিছু প্রয়োজনীয় উপকরণ রয়েছে যেমন- মধু, বেসন (বুটের আটা), লেবুর রস, শসার রস, টক দই, গোলাপজল, নিম পাতার পেস্ট, মুলতানি মাটি (ফুলারস আর্থ)।

ত্বক পরিষ্কার করা

যে উপকরণগুলো প্রয়োজন- বেসন ২ টেবিল চামচ, শসা রস এক টেবিল চামচ, গোলাপ জল এক টেবিল চামচ

পদ্ধতি
বেসন, শসার রস এবং গোলাপ জল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন এবং এটি মুখে লাগিয়ে দুই থেকে তিন মিনিট ম্যাসাজ করুন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই ধাপটিতে ত্বকের অতিরিক্ত তেল ও ময়লা দূর করবে।

স্কাবিং

প্রয়োজনীয় উপকরণ- মুলতানি মাটি ২ টেবিল চামচ, লেবুর রস এক টেবিল চামচ, টক দই ১ টেবিল চামচ।

পদ্ধতি
সব উপকরণ ভালো করে মিশিয়ে মুখে লাগান ও হালকা হাতে ঘষুন। পাচ থেকে সাত মিনিটের জন্য রেখে দিন এবং পরে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি মৃত কোষ দূর করে ও ত্বক গভীরভাবে পরিষ্কার করে।

মাস্ক

উপকরণ- নিম পাতার পেস্ট ২ টেবিল চামচ, মুলতানি মাটি এক টেবিল চামচ, গোলাপজল এক টেবিল চামচ।

পদ্ধতি
উপকরণ গুলো মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন এবং মুখে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য রাখুন তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের ব্রণ কমাতে সাহায্য করে।

ময়েশ্চারাইজিং

উপকরণ- মধু এক চামচ, লেবুর রস এক থেকে দুই চামচ।

পদ্ধতি
লেবু ও মধু মিশিয়ে মুখে লাগান। এটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করবে এবং ত্বক নরম ও উজ্জ্বল হবে।

ফেসিয়াল করলে কি ফর্সা হয়

ফেসিয়াল করলে কি ফর্সা হয়? কোন ফেসিয়াল করে ফর্সা হয় এই আর্টিকেলে এখন আমরা আপনাদের মাঝে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো।

মূলত ফেসিয়াল ত্বকের পরিচর্যার একটি প্রক্রিয়া। এটি আপনার ত্বককে ফর্সা না বরং উজ্জ্বল ও সতেজ দেখাতে সহায়তা করে। ফেসিয়াল করলে মূলত ত্বকের মৃত কোষ দূর হয় ও ত্বককে ময়েশ্চারাইজার করে এবং ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। ফেসিয়াল আসলে ফর্সা হওয়ার চাইতে ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য করা হয়, এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা হিসেবে এটি কার্যকরী।

তবে ফেসিয়াল করার কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমন ডিপ ক্লিনিং, এটি ত্বকের গভীরে জমে থাকা ময়লা তেল ও মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়া রয়েছে ত্বকের আদ্রতা বৃদ্ধির জন্য ফেসিয়াল। এটি মূলত ব্যবহৃত হয় ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে ও কোমল দেখায়। তাছাড়া ফেসিয়াল করলে ব্রণের ঝুঁকি কমায়।

সাধারণত ফেসিয়াল করে মাধ্যমে অতিরিক্ত ত্বকে তেল এবং ময়লা পরিষ্কার করে ব্রণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়া নিয়মিত ফেসিয়াল করলে চেহারার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। ত্বকের মৃত কোষ গুলো দূর হয়ে যায় ও ত্বক উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যবান দেখায়। নিয়মিত ফেসিয়ালের আরেকটি সুবিধা হচ্ছে ব্ল্যাড সার্কুলেশন উন্নতি করে। এটি ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে।

গোল্ড ফেসিয়াল করলে কি হয়

গোল্ড ফেসিয়াল করলে কি হয় তা এখন আপনাদের মাঝে আলোচনা করা হবে। গোল্ড ফেসিয়াল আসলে ত্বকের যত্নের একটি প্রক্রিয়া, এখানে ২৪ ক্যারেট সোনা মিশ্রিত পণ্য ব্যবহার করা হয়ে থাক। সোনার উপাদান গুলোর বিভিন্ন গুনাগুনের জন্য এটি সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কার্যকর বলে মনে করা হয়।ত্বক উজ্জ্বল করে, বলিরেখা হ্রাস করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে থাকে।

গোল্ড ফেসিয়াল সাধারণত এমন ব্যক্তিদের জন্য উপযুক্ত যাদের ত্বক শুষ্ক, সংবেদনশীল বা বার্ধক্যের লক্ষণ দেখা দিয়েছে।গোল্ড ফেসিয়াল এর কিছু উপকারিতা রয়েছে। গোল্ড ফেসিয়াল করলে এ সকল উপকারিতা দেখা যায়।

এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। এ ফেসিয়াল করলে ত্বকের অণুগুলো গভীরে প্রবেশ করে এবং ত্বককে দীপ্তময় উজ্জ্বলতা করে তোলে। এছাড়া বার্ধক্য প্রতিরোধ করে থাকে, এ ফেসিয়াল করলে কোলাজেন উৎপাদন উজ্জীবিত করে ত্বককে টানটান ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে থাকে ফলে বলিরেখা এবং ফাইন লাইন কমে যায়

এটি করলে ত্বকের বিষাক্ত তা দূর হয়ে যায়। এই ফেসিয়াল এর মাধ্যমে ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়া উন্নত করে থাকে, ফলে ত্বক পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন এবং সতেজ দেখায়। এই ফেসিয়াল রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এটি ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে এবং ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে।এছাড়া ত্বকের ময়েশ্চারাইজার করার ফলে ত্বকের পুষ্টি প্রদান করে ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

গোল্ড ফেসিয়াল কতদিন পরপর করতে হয়

গোল্ড ফেসিয়াল কতদিন পরপর করতে হয় চলুন জেনে নেয়া যাক। কোন ফেসিয়াল করে ফর্সা হয় এই প্রবন্ধে আপনাদের মাঝে সব ধরনের ফেসিয়াল সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
গোল্ড-ফেসিয়াল-কতদিন-পরপর-করতে-হয়
মূলত গোল্ড ফেসিয়াল একটি বিলাসবহুল ত্বকের যত্নের প্রক্রিয়া। এটি করলে ত্বক অনেক উজ্জ্বল এবং কোমল হয়। এটি বিউটি সেলুনে করা হয় এবং অনেকেই এ থেকে ভালো ফলাফল পেতে চান, তবে গোল্ড ফেসিয়াল কতদিন পরপর করা উচিত তা নির্ভর করে ত্বকের ধরন ও সমস্যার উপর।

সাধারণ ত্বকের জন্য এই ফেসিয়ালটি প্রতি চার থেকে ছয় সপ্তাহ পরপর করা যেতে পারে। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এটি প্রতি চার সপ্তাহ পর পর করা অনেক ভালো। কেননা তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ ও অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়, ফলে এ ধরনের ত্বকের জন্য কয়েক সপ্তাহ পরপর ফেসিয়াল করাই ভালো।

এই ফেসিয়ালটি শুষ্ক ও সংবেদনশীল ত্বকের জন্য কম করা ভালো। এটি ছয় থেকে আট সপ্তাহ পর পর করা যেতে পারে, কারণ সংবেদনশীল ত্বক অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন পরে। আর পরিপক্ক ত্বক ফেসিয়াল করার জন্য প্রতি চার সপ্তাহ পর পর করা ভালো। এ ধরনের ত্বক বয়সের সাথে সাথে স্থিতিস্থাপকতা হারাতে থাকে। তাই এ ধরনের ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য এবং বলিরেখা কামানোর জন্য প্রতি চার সপ্তাহ পর পর ফেসিয়াল করা অনেক ভালো।

মাসে কতবার ফেসিয়াল করা উচিত

মাসে কতবার ফেসিয়াল করা উচিত তার নির্ভর করে ত্বকের ধরুন, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা এবং ব্যক্তিগত যত্নের প্রয়োজনীয়তার উপর। ফেসিয়াল করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কোন কোন ফেসিয়াল করে ফর্সা হওয়া যায়। তবে সাধারণত মাসে এক থেকে দুইবার ফেসিয়াল করা উপযোগী বলে মনে করা হয়ে থাকে।

কোন ফেসিয়াল করে ফর্সা হয় এই প্রবন্ধে ত্বকের দল অনুযায়ী ফেসিয়ালের পরামর্শ উল্লেখ করা হলো।

সংবেদনশীল ত্বক, এ ধরনের ত্বকের জন্য মাসে একবার ফেসিয়াল করাই ভালো। মৃদু এবং প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করা উচিত এ ধরনের ত্বকের জন্য। কেননা সংবেদনশীল ত্বকে বেশি ফেসিয়াল করলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। এর জন্য এ ধরনের ত্বকে বেশি ফেসিয়াল না করাই ভালো। তবে ফেসিয়াল করতে হলে অবশ্যই প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

তৈলাক্ত ত্বক, এ ধরনের ত্বকের জন্য মাসে দুইবার ফেসিয়াল করা যেতে পারে। এ ধরনের ত্বকের নিয়মিত ফেসিয়াল করা অনেক ভালো। কেননা এ ধরনের ত্বকে তৈলাক্ত ভাব, ব্রণ এবং ব্ল্যাকহেডস হয়।

শুষ্ক ত্বক, এই ত্বকের জন্য মাসে একবার ফেসিয়াল করাই যথেষ্ট। এ ধরনের ত্বকের ফেসিয়াল করার সময় হাইড্রেটিং এবং ময়েশ্চারাইজিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করা উচিত। তাহলে ত্বক মসৃণ ও কোমল রাখতে সহায়তা করবে।

যৌগিক ত্বক, যৌগিক ত্বকে মাসে এক থেকে দুইবার ফেসিয়াল করা যায়। এই ত্বকের তৈলাক্ততা এবং শুষ্ক অংশের জন্য আলাদা যত্ন নিশ্চিত করা যায় ফেসিয়াল এর মাধ্যমে।

কিছু অতিরিক্ত টিপস জেনে নিন, ত্বকের সমস্যার ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের ফেসিয়াল আছে এ ধরনের ফেসিয়াল গুলো আপনি নিতে পারেন। যেমন হাইড্রেশন ফেসিয়াল, ব্রাইট্রেনিং ফেসিয়াল, এন্টি এজিং ফেসিয়াল। যেটা আপনার ত্বকের জন্য ভালো এখান থেকে সেই ফেসিয়ালটি আপনি নির্বাচন করতে পারেন।

কতদিন পর পর ফেসিয়াল করা উচিত

কতদিন পর পর ফেসিয়াল করা উচিত আমাদের জানা উচিত। কেননা এটা জানলে আমাদের স্কিন বা মুখের ত্বকটি অনেক ভালো থাকে। মুখে বিভিন্ন ধরনের আমরা ফেসিয়াল করার ক্রিম ব্যবহার করে থাকি। আবার অনেক সময় ফর্সা হওয়ার জন্য জন্য বিভিন্ন ফেসিয়াল করে থাকি। তাই আমাদের জানা উচিত কতদিন পর পর ফেসিয়াল করলে ত্বক ভালো থাকে। নিম্নে এ বিষয়টি আলোচনা করা হলো।

ত্বকের যত্নের জন্য ফেসিয়াল একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে এটি কতদিন পর পর করা উচিত তা আপনার ত্বকের ধরন, সমস্যা এবং স্কিন কেয়ার এর লক্ষ্য গুলোর ওপর নির্ভর করে থাকে। সাধারণভাবে ত্বকের ধরনের ভিত্তিতে ফেসিয়াল করার সময়সূচি উল্লেখ করা হলো।

তৈলাক্ত ত্বক, এই ত্বকের জন্য মাসে একবার ফেসিয়াল করা ভালো। এই ত্বকে অতিরিক্ত তেল উৎপন্ন হয়, ফলে ব্ল্যাকহেডস, ব্রণ বেশি হতে পারে। তাই নিয়মিত পরিষ্কার করার প্রয়োজন হয়।

স্বাভাবিক ত্বক, এই ত্বকের জন্য সাধারণত ৬ সপ্তাহ পর পর ফেসিয়াল করাই যথেষ্ট। এরকমের ত্বকে তেল বা আদ্রতা সমস্যা তেমন থাকে না, তবে নিয়মিত ফেসিয়ালের মাধ্যমে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও সতেজতা বেড়ে যায়।

শুষ্ক ত্বক, এই ত্বকের জন্য সাধারণত আদ্রতার ঘাটতি অনুভাব হয়। তাই মাসে একবার থেকে ছয় সপ্তাহ পর পর ফেসিয়াল করতে পারেন। এই ফেসিয়াল এর মাধ্যমে ত্বকে আদ্রতা পুনরুদ্ধার হয় এবং ত্বক মসৃণ ও কোমল হয়ে যায়।

সংবেদনশীল ত্বক, এই ত্বকের জন্য ফেসিয়াল কম করা উচিত। এটি সাধারণত.৮ থেকে ১০ সপ্তাহের মধ্যে একবার করা অনেক ভালো। অতিরিক্ত ফেসিয়াল সংবেদনশীল ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে যত্ন নেওয়া উচিত এই ত্বকের জন্য।

একটি বিবেচনায় আপনি যদি বিশেষ প্রয়োজনে কোন বিশেষ অনুষ্ঠানের আগে ত্বককে উজ্জ্বল করতে চান তাহলে এক সপ্তাহ আগে ফেসিয়াল করতে পারেন। তাছাড়া বয়স বেশি হলে সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের যত্নের প্রয়োজন বাড়ে। তাই বয়স বাড়ার ৩০ এর পর ফেসিয়াল নিয়মিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ ত্বকের পূর্ণ নবীকরণ প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে।

কোন ফেসিয়ালের দাম কত

কোন ফেসিয়াল করে ফর্সা হয় এই আর্টিকেলে এখন আমরা দামের বিষয়টি আলোচনা করব। কোন ফেসিয়ালের দাম কত ফেসিয়াল এর দাম বিভিন্ন বিউটি বা স্পা সেলুনের ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হয়।এছাড়া ফেসিয়ালের ধরন এবং এতে ব্যবহৃত পণ্যের মান এর বিভিন্ন দামের উপর প্রভাব ফেলে। কিছু ফেসিয়ালের দাম নিম্নে উল্লেখ করা হলো সম্ভবত বা সাধারণত এগুলো দামের দিক দিয়ে এই রেঞ্জে থাকে।

ফেসিয়ালের প্রকারভেদ ও দাম

নরমাল ফেসিয়াল, এই ফেসিয়ালের দাম ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা। এ ধরনের ফেসিয়াল ত্বকের বিভিন্ন ময়লা পরিষ্কার এবং মৃদু মাসাজের মাধ্যমে ত্বককে ফ্রেশ রাখে।

হারবাল ফেসিয়াল, এই ফেসিয়াল এর দাম সাধারণত ১০০০ থেকে ২ হাজার টাকা হয়। এটি প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে ত্বককে সুন্দর করে। এটা অবশ্য ত্বকের জন্য নিরাপদ এবং আরামদায়ক।

এন্টি এজিং ফেসিয়াল, এর দাম ২০০০ থেকে ৫ হাজার টাকার ভেতরে হয়। এটা অবশ্য ত্বকের বয়সের ছাপ কমানোর জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়।

ব্রাইটেনিং বা গ্লো ফেসিয়াল, এই ফেসিয়ালের দাম সাধারণত ১৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। এটি ত্বককে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং বিশেষ মাস্ক ব্যবহার করা হয়।

এ্যাকনে ফেসিয়াল, এই ফেসিয়ালের সাধারণত দাম হয় ১৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা। এই ফেসিয়ালটি করলে ত্বকের ব্রণ বা ফুস করে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

গোল্ড বা ডায়মন্ড ফেসিয়াল, এই ফেসিয়াল এর দাম সাধারণত ৩০০০ থেকে ৮ হাজার টাকা হয়। এই ফেসিয়ালটি অধিক তার অভিজাত এবং বিশেষ অনুষ্ঠানের আগে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

এসকল ফেসিয়ালের দাম সেরা স্পা বা সেলুন গুলোতে আরো বেশি হতে পারে। আবার অফার ও প্যাকেজের সময় বিভিন্ন দাম পরিবর্তিত হতে পারে। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের সকল ফেসিয়াল সেলুন বা স্পাতে গিয়ে নির্দিষ্ট দাম জেনে নিতে পারেন।

শেষ কথা

পরিশেষে বলা যায় যে উপরের আলোচনা ভালোভাবে পড়লে এবং তা সঠিকভাবে মেনে চললে আপনার ত্বক সুন্দর হবে বলে আশা করা যায়। তাই আপনারা সঠিকভাবে এগুলো মেনে চলবেন। 

ত্বককে ফর্সা নয় বরং ত্বককে স্বাস্থ্য উজ্জ্বল রাখার চেষ্টা করুন।  নিয়ম মেনে সঠিক ভাবে ফেসিয়াল করন এবং আপনার ত্বককে সুস্থ্য রাখুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url