ঘন ঘন মাথা ব্যথার কারণ কি

ঘন ঘন মাথা ব্যথার কারণ কি এই আর্টিকেলে মাথা ব্যথা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত তুলে ধরবো। মাথা ব্যথা এমন একটি সমস্যা যা অনেকের জীবনে একাধিকবার ঘটে থাকে। এই ঘন ঘন মাথা ব্যথার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে।

ঘন-ঘন-মাথা-ব্যথার-কারণ-কিতবে যদি আমাদের মাথা ব্যথা ঘনঘন হয় তাহলে আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।এই প্রবন্ধে আমরা ঘন ঘন মাথা ব্যথার কারণ প্রকারভেদ এবং বিভিন্ন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

পেজ সূচিপত্রঃ ঘন ঘন মাথা ব্যথার কারণ কি

ঘন ঘন মাথা ব্যথার কারণ কি

ঘন ঘন মাথা ব্যথার কারণ কি এটা জানতে হলে বা বুঝতে হলে আর্টিকেলটি ধারাবাহিকভাবে মনোযোগ সহকারে পড়ে যেতে হবে। আসলে বিভিন্নভাবে মাথাব্যথা হতে পারে এবং বিভিন্ন রকম মাথা ব্যথার প্রকারভেদ রয়েছে। নিম্নে ঘন ঘন মাথা ব্যথার কারণ কি উল্লেখ করা হলো।

মানসিক চাপ, অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা উদ্বেগ অনেক সময় মাথা ব্যথার কারণ হয়। টেনশন হেডেকের প্রধান কারণ হিসেবে মানসিক চাপকে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। ঘুমের অভাব, প্রয়োজনীয় ঘুমের অভাবে শরীর এবং মস্তিষ্কের ক্লান্তি বৃদ্ধি পায়, যা মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে বলে ধরা হয়।

হরমোনজনিত পরিবর্তন, এটা সাধারণত মহিলাদের ক্ষেত্রে গর্ভধারণ, মাসিক চক্র বা মেনোপজের সময় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে। খাদ্যাভ্যাস, কিছু খাবার আছে যেমন  ক্যাফেইন, চকলেট, অ্যালকোহল ইত্যাদি মাথা ব্যথার উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে থাকে। অনিয়মত খাবার খাওয়ার অভ্যাসও মাথা ব্যথা সৃষ্টির কারণ হতে পারে। 

উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ রক্তচাপ একটি নীরব ঘাতক হিসেবে পরিচিত, এটি প্রায় ঘন ঘন মাথা ব্যথার কারণ হয়ে থাকে। চোখের সমস্যা, চোখের অতিরিক্ত চাপ, মাইপিয়া ও চোখের অন্যান্য সমস্যার কারণে মাথা ব্যথা হয়। এছাড়া ধুলাবালি, ধোঁয়া ও তাপমাত্রা পরিবর্তন মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে।

মাথা ব্যথার প্রকারভেদ

মাথা ব্যথার প্রকারভেদ ঘন ঘন মাথা ব্যথার কারণ কি এই প্রবন্ধে এ সম্পর্কে এখন আমরা চলুন বিস্তারিত জেনে নেই। মাথা ব্যথা আমাদের প্রায় দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে যদি এই মাথা ব্যথায় প্রায় প্রতিদিন বা সপ্তাহে একাধিকবার হয় তাহলে তা ঘন ঘন মাথা ব্যথা বলে বিবেচিত হয়। নিম্নের কিছু প্রকারভেদ আলোচনা করা হলো।
মাথা-ব্যথার-প্রকারভেদ
মাইগ্রেন, একটি গুরুতর মাথা ব্যথা যা তীব্রভাবে অনুভূতি হয়। আলো বা শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা বমি বমি ভাব ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।

টেনশন হেডেক, এটা একটু সবচেয়ে সাধারণ মাথা ব্যথা, যা স্ট্রেস বা মানসিক চাপ থেকে আসে। এটা মাথার চারপাশে টান টান বা চাপ অনুভূতি হয়। 

সাইনাস হেডেক, সাইনাসে প্রদাহ বা সংক্রমণ হলে সাইনাস হেডেক হয়। এটি মুখের, নাকের চারপাশে ব্যথা সৃষ্টি করে থাকে।

ক্লাস্টার হেডেক, এটি এই ধরনের মাথা ব্যথা যে সাধারণত একপাশ অনুভূত হয় এবং এটি তীব্র ও ধারাবাহিক হয়। একবার শুরু হলে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস ধরে চলতে পারে।

মাথা ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

মাথা ব্যথা হয় আমাদের বিভিন্ন কারণে। এ সকল কারণগুলো যদি আমাদের জানা থাকে তাহলে এর প্রতিরোধ বা প্রতিকার করা সম্ভব। মাথা ব্যথার কারণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো নিম্নে বর্ণনা করা হলো।
  • অতিরিক্ত টেনশন করলে মাথা ব্যথা হয়।
  • বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপের কারণে মাথা ব্যথা হয়।
  • যারা আলো বা শব্দের প্রতি সংবেদনশীল তাদের মাথা ব্যথা হতে পারে।
  • ঘুমের অভাবের কারণে মাথা ব্যথা হয়।
  • মহিলাদের বিভিন্ন হরমোন জনিত সমস্যার কারণে মাথা ব্যথা হয়ে থাকে।
  • বিভিন্ন খাদ্যাভাসের কারণে মাথা ব্যথা হয়।
  • চোখের বিভিন্ন সমস্যা থাকলে মাথা ব্যথা হয়।
  • যাদের অতি উচ্চ রক্তচাপ তাদের মাথা ব্যথা প্রায় দেখা দেয়।
  • পরিবেশের বিভিন্ন ধুলাবালি ধোয়া ও তাপমাত্রার কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে।
এখন আমরা জানবো কিভাবে মাথা ব্যথার প্রতিকার বা প্রতিরোধ করা যায়।

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
আমরা বিভিন্ন যোগব্যায়াম, মেডিটেশন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়মিত অনুশীলন করলে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ হবে, এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ হলে মাথা ব্যথা প্রতিকার বা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

সঠিক খাদ্যাভ্যাস
বিভিন্ন ধরনের সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে মাথা ব্যথা প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া বেশি বেশি পানি পান এবং স্বাস্থ্যকর খাবার মাথা ব্যথা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম
পর্যাপ্ত বিশ্রাম, ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত হলে অতিরিক্ত যেকোনো কাজের প্রেসার কমে, ফলে বিভিন্ন দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং মাথা ব্যথা দূর হয়।

ব্যথা নাশক ঔষধ
মাথা ব্যথার বিভিন্ন ওষুধ থাকলেও প্রয়োজনীয় ঔষধ রয়েছে যেমন প্যারাসিটামল বা আইবোপ্রফেন ব্যবহারে মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার করলে বিভিন্ন ক্ষতি হতে পারে। 

অতিরিক্ত মাথা ব্যথার কারণ কি

আসলে অতিরিক্ত মাথা ব্যথা অনেক কারণ থাকলেও সাধারণত এটি দুই ধরনের হতে পারে। এর মধ্যে একটি হলো প্রাথমিক এবং গৌণ বা সেকেন্ডারি মাথা ব্যথা। প্রাথমিক মাথা ব্যথা নিজে থেকেই হতে পারে, কিন্তু গৌণ মাথা ব্যথা সাধারণত অন্য কোন শারীরিক সমস্যার কারণে হতে পারে। নিম্নে অতিরিক্ত মাথা ব্যথার কারণ গুলো উল্লেখ করা হলো।
অতিরিক্ত-মাথা-ব্যথার-কারণ
এর প্রাথমিক কারণ গুলোর মধ্যে হচ্ছে মাইগ্রেন সমস্যা । এটি মূলত আলো, তাপ শব্দের কারণে হতে পারে। এরপর হচ্ছে টেনশন। এটি মূলত একটি চাপ জনিত মাথা ব্যথা। অর্থাৎ মস্তিষ্কের চারপাশ টান অনুভিত হওয়া। 

দ্বিতীয় হচ্ছে গৌণ মাথা ব্যথার কারণ। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ তারপর সাইনাস ইনফেকশন। সাইনাস ইনফেকশন মূলত নাক দিয়ে সর্দি পরা ও নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া। এছাড়া বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মাথা ব্যথা হয়। তাছাড়া চোখের সমস্যা, ও স্টোক বা ব্রেন টিউমার থাকলে অতিরিক্ত মাথা ব্যথা হয়।

হঠাৎ মাথা ব্যথার কারন কি

হঠাৎ মাথা ব্যথার কারন কি চলুন জেনে নেই বিস্তারিত। হঠাৎ মাথা ব্যথার কারনগুলো নানা রকম হতে পারে এবং সেগুলো সাময়িক, যা চিকিৎসা ছাড়াই ভালো হতে পারে। তবে কিছু গুরুতর কারণেও হতে পারে, নিম্নে তা আলোচনা করা হলো।

  • বেশি চাপ বা মানসিক উদ্বেগ হলে হঠাৎ করে মাথা ব্যথা হতে পারে।
  • শরীরে ডিহাইড্রেশন বা জলশূন্যতা দেখা দিলে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের ঘাটতি দেখা দিলে।
  • চোখের ক্লান্তি দেখা দিলে।
  • সাইনাসের সমস্যা থাকলে হঠাৎ মাথা ব্যথা হয়।
  • ক্যাফেইন খাবারের প্রতিক্রিয়ায় হঠাৎ মাথা ব্যথা হতে পারে।
  • রক্তচাপ বৃদ্ধির ফলে হঠাৎ মাথা ব্যথা হয়।
  • ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে হঠাৎ মাথা ব্যথা হয়।
  • মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে হঠাৎ মাথা ব্যথা হয়।

শেষ কথা - ঘন ঘন মাথা ব্যথার কারণ কি

পরিশেষে বলা যায় যে মাথা ব্যথার বিভিন্ন কারণ থাকে। তবে ঘন ঘন মাথা ব্যথা অনেক জটিল হয় বিভিন্ন পরিপেক্ষিতে, তাই এমন যদি হয়ে থাকে তবে আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। 

এই মাথা ব্যথা সাময়িক ভাবেও হয়ে থাকে সেগুলো আপনা আপনি ভালো হয়ে যায়। তবে তীব্র বা ঘন ঘন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url