শীতের পিঠা-পুলি বানানোর নতুন কৌশল

শীতের পিঠা-পুলি বানানোর নতুন কৌশল এই আর্টিকেলে আমরা জানবো কিভাবে নতুন ভাবে নতুন কৌশলে পিঠা বানানো যায়। নতুন টিপস গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। কিছু গুরুত্বপূর্ণ রেসেপি আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।

শীতের-পিঠা-পুলি-বানানোর-নতুন-কৌশলবর্তমানে এখন মানুষ অনেক রকম পিঠা বানানোর কৌশল জানতে চায়। কেনোনা আমাদের দেশের মানুষ অনেক সৌখিন। তাই সুন্দর ও ভালো পিঠা বানানোর জন্য এই আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো হবে বলে আমি আশা করছি।

সূচিপত্রঃ শীতের পিঠা-পুলি বানানোর নতুন কৌশল

শীতের পিঠা-পুলি বানানোর নতুন কৌশল

শীতের পিঠা-পুলি বানানোর নতুন কৌশল জানতে হলে আমাদের আগে পিঠা তৈরির কিছু মৌলিক ধারণা নিতে হবে।পিঠাপুলি বানানো কোন সাধারণ বিষয় নয় এটি বানাতে অনেক কৌশল অবলম্বন করতে হয়। তবেই এই বিচার একটি সঠিক কাঠামো আসে। যারা রান্নাবান্নায় এক্সপার্ট বা পারদর্শী তারা পিঠাপুলি চমৎকার ভাবে বানাতে পারে। 

শীতের পিঠার অনেক মজা। এ সময় শহর কিংবা গ্রামে পিঠা বানানো হয়, তবে গ্রামে পিঠাপুলি বানানোর উৎসব করে।শহরে পিঠাপুলি বানানো বা এর উৎসব তেমন একটা পরিলক্ষিত হয় না। গ্রামে শুধু শীতেই নয় অন্যান্য সময়েও পিঠাপুলি বানিয়ে থাকে। পিঠা বানানোর উৎসব প্রায় গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে লেগে থাকে। 

গ্রামে পিঠাপুলি বানানো আজকের কথা নয়, বহুকাল আগ থেকেই বাংলার প্রাচীন সময় থেকে পিঠাপুলি বানানো হয়। বিভিন্ন ধরনের পিঠা বানানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হয়। যেন এই পিঠার বিভিন্ন আকৃতি আকার এগুলো ভিন্ন রকম হয় এবং নানা ধরনের পিঠা নানা রকম স্বাদের হয়ে থাকে।

শীতে পিঠা বানানোর উপকরণ

শীতে পিঠা বানানোর উপকরণ প্রয়োজন হয়। শীতের পিঠা-পুলির জন্য বিভিন্ন ধরনের উপকরণ প্রয়োজন। প্রত্যেক পিঠার একটি আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে। প্রত্যেকটি পিঠা স্বাদ ও রং থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। প্রত্যেকটি পিঠার আলাদা আলাদা উপকরণের প্রয়োজন হয়। একেকটি পিঠার উপকরণগুলো বাজার থেকে নিয়ে আসা হয়।

বিভিন্ন মুদিখানার দোকান থেকে প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো নিয়ে আসা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন পিঠা তৈরির ছাঁচ ছোটখাটো আসবাবপত্রের দোকান ও কিছু কসমেটিক দোকানেও পাওয়া যায়। তবে গ্রামে পিঠা বানানোর ছাঁচ নিজেরাই তৈরি করে।নিজেরাই মনের মতন ছাঁচ তৈরি করে, বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করে।

শীতে পিঠা বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্ততি

শীতে পিঠা বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্ততি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শীতের পিঠা-পুলি বানানোর জন্য যে প্রস্তুতি রয়েছে তার মধ্যে সবার আগে নিজের মনস্থির করতে হবে। আজকে কি ধরনের পিঠা তৈরি করব। সঠিক ভাবে প্রস্তুতি নিলে পিঠা বানানোর উপক্রম থেকে প্রয়োজনীয় সকল জিনিস নিয়ে পিঠা বানানোর কাজ সহজ হবে।

শীতের পিঠাপুলি বানানো একটি উৎসবের মতো। এ সময় গরম গরম পিঠা খেতে অনেক ভালো লাগে। এই জন্য প্রয়োজনীয় সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিলে পিঠা বানাতে বেগ পেতে হয় না। ভালো পিঠা তৈরির জন্য ভালো মানের উপকরণ অবশ্যই প্রয়োজন। তাই শীতে পিঠা বানানোর জন্য প্রয়োজনে প্রস্তুতি নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আমি মনে করি।

নানা রকম পুলি পিঠা বানানোর কৌশল

নানা রকম পুলি পিঠা বানানোর কৌশল নানান রকম হয়ে থাকে। একটি পিঠার একটি কৌশল প্রয়োজন।। তাই বিভিন্ন পিঠা বানাতে বা নানা ধরনের পিঠা বানাতে অনেক কৌশল অবলম্বন করতে হয়। একটি পিঠার একটি কৌশল থাকার কারণ, যত রকম পিঠা তৈরি করতে হবে ততটাই কৌশল জানা উচিত। এই আর্টিকেলে আমরা কয়েকটি পুলি পিঠা বানানোর কৌশল জানবো।

নানা-রকম-পুলি-পিঠা-বানানোর-কৌশলদুধ পুলি- এই দুধপুলি পিঠা বানানোর জন্য প্রথমেই কিছু প্রয়োজনীয় উপকরণ দরকার। প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো নিম্নরূপ

চালের আটা বা ময়দা, গমের ময়দা, চিনি, গুড়, নারিকেল কোরা, গুরুর দুধ বা প্যাকেট দুধ, সয়াবিন তেল, বিশুদ্ধ পানি, কিচমিচ, কাচা বাদাম ও লবণ। 

প্রস্তুত প্রণালী- দুধপুলি দুই ভাবেই তৈরি করা যায় চিনি দিয়ে বা গুড় দিয়ে। একইভাবে তৈরি করা যায় এর প্রস্তুত প্রণালীটি আপনাদের কাছে তুলে ধরা হলো- প্রথমে কিছু বিশুদ্ধ পানি গরম করে তাতে যে পরিমাণ আপনার পিঠা প্রয়োজন সেই পরিমাণ অনুযায়ী চালের আটা ও সামান্য কিছু গমের আটা ওই গরম পানিতে মিশাতে হবে। এমন ভাবে মিশাতে হবে যেন আটাটি বললে রুটি তৈরির আটার মতন হয়।

এরপর দুধ, চিনি, নারকেল করা ও সামান্য পরিমাণ পানি গরম করে নিতে হবে বা একবার ফুটিয়ে নিতে হবে। অন্য পাত্রে কিছু পরিমাণ পানি, চিনি, নারকেল কোরা ও সামান্য দুধ দিয়ে আঠার মতন হালুয়া করতে হবে। এরপর সে হালুয়া দিয়ে প্রথমে আটা তৈরির যে জিনিসটি ছিল অর্থাৎ রুটি বানানোর জন্য যে বলটি ছিল সেই বলটি কে রুটির চেয়ে মোটা করে স্টিলের গ্লাস অথবা কোন ছাঁচ থাকলে কেটে পুলিগুলো আগে বানায় নিতে হবে।

এবার দুধ, চিনি, নারকেল কোরা, কিচমিচ, বাদাম, হালকা লবণ ও পানি যে গরম একবার ফুটিয়ে নেওয়া ছিল, অর্থাৎ এটাকে সেরা বলে। এই সেরার মধ্যে পিঠাগুলো সয়াবিন তেলে ভেজেও ছেড়ে দিতে পারি আবার না ভেজেও ছেড়ে দিতে পারে। এরপর সেগুলোকে গরম করতে হবে অবশ্যই একবার ফুটিয়ে নিতে হবে তাহলেই দুধপুলি বানানোর প্রক্রিয়া শেষ। এবার পরিবেশন করুন। 

ক্ষীর পুলি- পিঠা বানানোর জন্য প্রথমেই কিছু প্রয়োজনীয় উপকরণ দরকার। প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো নিম্নরূপ

চালের আটা বা ময়দা, গমের ময়দা, চিনি, গুড়, নারিকেল কোরা, গুরুর দুধ বা প্যাকেট দুধ, সয়াবিন তেল, বিশুদ্ধ পানি, কিচমিচ, কাচা বাদাম, লবণ ও আতপ চাউল।

প্রস্তুত প্রণালী- ক্ষীর পুলি দুই ভাবেই তৈরি করা যায় চিনি দিয়ে বা গুড় দিয়ে। একইভাবে তৈরি করা যায় এর প্রস্তুত প্রণালীটি আপনাদের কাছে তুলে ধরা হলো- প্রথমে কিছু বিশুদ্ধ পানি গরম করে তাতে যে পরিমাণ আপনার পিঠা প্রয়োজন সেই পরিমাণ অনুযায়ী চালের আটা ও সামান্য কিছু গমের আটা ওই গরম পানিতে মিশাতে হবে। এমন ভাবে মিশাতে হবে যেন আটাটি বললে রুটি তৈরির আটার মতন হয়।

এবার দুধ পুলি বানানোর জন্য যে রকম সেরা ও আটার বল তৈরী করেছিলাম, ঠিক সে ভাবেই এটাতেও তাই করতে হবে। শুধু হালুয়ার বদলে আতপ চালের ক্ষীর হবে একই প্রক্রিয়ায়। শুকনো পুলি- এটাও একই প্রক্রিয়ায় করতে হবে। শুধু তেলে ভাজা বাদ দিয়ে রুটি শেক দেওয়ার কড়ায়ে শেক দিতে হবে। তাহলেই রেডি হয়ে যাবে শুকনো পুলি।

শীতে বকুল পিঠা বানানোর কৌশল

শীতে বকুল পিঠা বানানোর কৌশল খুব সহজ। আর এই শীতের পিঠা-পুলির উৎসবে বকুল পিঠা খেতে কার না ভালো লাগে।আর এই বকুল পিঠা বানাতে সহজ কিছু উপকরণ হলেই হয়। প্রয়োজনীয় উপকরণ গুলো হল-চাউলের আটা, চিনি, সয়াবিন তেল, ভাজা বাদাম, দুধ, নারিকেল কোরা ও বিশুদ্ধ পানি।

প্রস্তুত প্রণালী-প্রথমে চাউলের আঠা চিনি ভাজা বাদাম দুধ নারিকেল কোরা ও বিশুদ্ধ পানি একসাথে ফুটিয়ে নিয়ে রুটি বলার আটার মতন করে তৈরি করে নিতে হবে। এ এর পরে হাতের সাহায্যে গোল গোল করে লাড়ু বানিয়ে সেরাতে চুবিয়ে সাথে সাথে তুলে সয়াবিন তেলে ভেজে নিতে হবে। তাহলে হয়ে যাবে বকুল পিঠা।

কুমিল্লা পিঠা বানানোর কৌশল

শীতে কুমিল্লা পিঠা বানানোর কৌশল খুব সহজ। শীতে কুমিল্লা পিঠা খেতে অনেক ভালো লাগে। আর শীতে পিঠা-পুলির উৎসবে এই কুমিল্লা পিঠা বানাতে সহজ কিছু উপকরণ হলেই হয়। প্রয়োজনীয় উপকরণ গুলোর মধ্যে হল-চাউলের আটা, চিনি, সয়াবিন তেল, ভাজা বাদাম, দুধ, নারিকেল কোরা ও বিশুদ্ধ পানি।

প্রস্তুত প্রণালী-প্রথমে চাউলের আঠা চিনি ভাজা বাদাম দুধ নারিকেল কোরা ও বিশুদ্ধ পানি একসাথে ফুটিয়ে নিয়ে রুটি বলার আটার মতন করে তৈরি করে নিতে হবে। এ এর পরে হাতের সাহায্যে লম্বা করে পেঁচিয়ে তেলে ভেজে নিতে হবে। তারপর প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে সেরা করতে হবে। সেরাতে ভিজিয়ে দিলেই হয়ে কুমিল্লা পিঠা। 

পাটিসাপ্টা পিঠা বানানোর কৌশল

পাটিসাপ্টা পিঠা বানানোর কৌশলটা অনেক সহজ। এই পিঠা খেতে অনেক ভালো লাগে। এই পিঠা বানাতে খরচ কম হয়।কেননা এর প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো কম লাগে। প্রয়োজনীয় উপকরণ হলো-চাউলের আটা, গমের আটা, চিনি, সয়াবিন তেল, নারিকেল কোরা ও বিশুদ্ধ পানি।

পাটিসাপ্টা-পিঠা-বানানোর-কৌশলপ্রস্তুত প্রণালী- প্রথমে চাউলের আটা, গমের আটা, চিনি, নারকেল কোরা ও বিশুদ্ধ পানি পরিমাণমতো একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এটা এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যেন নরম হয় অর্থাৎ আমরা ডিম ভাজলে যেরকম করি ঠিক সে ভাবেই নরম করে মিশ্রণটি ফেটে নিতে হবে। এরপর তেলে ভেজে একপাশ একপাশ করে উল্টিয়ে নিলেই হয়ে গেলো পাটিসাপ্টা পিঠা।

জিলোপি পিঠা বানানোর কৌশল

জিলোপি পিঠা বানানোর কৌশল আগে বর্ণিত কুমিল্লা পিঠা মতনি খুব সহজ। শীতে সব পিঠায় খেতে অনেক মজা লাগে।  এই জিলোপি পিঠা বানাতে সহজ কিছু উপকরণ হলেই হয়। প্রয়োজনীয় উপকরণ গুলোর মধ্যে হল-চাউলের আটা, চিনি, সয়াবিন তেল, ভাজা বাদাম, দুধ, নারিকেল কোরা ও বিশুদ্ধ পানি।

প্রস্তুত প্রণালী- চাউলের আটা, চিনি, সয়াবিন তেল, ভাজা বাদাম, দুধ, নারিকেল কোরা ও বিশুদ্ধ পানি পরিমাণমতো একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর এটা এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যেন নরম হয়। এরপর জিলোপির মতো আকৃতি দিয়ে তেলে ভেজে , সেরা করে গরম সেরাতে ছেড়ে দিলেই হয়ে গেলো জিলোপি পিঠা।

বিভিন্ন ভাপা পিঠা বানানোর কৌশল

বিভিন্ন ভাপা পিঠা বানানোর কৌশল জানতে পারবেন এই আর্টিকেলে। শীতে গরম ভাপা পিঠার স্বাদই আলাদা। ভাপা পিঠা বানাতে চাউলের আটা বা সিদ্ধ চাউলের গুড়া হলেও চলে। এটা বানাতে চিনি বা গুড় উভয় দিয়েই হয়। তবে খেজুরের গুড় দিয়ে বানালে বেশি ভালো লাগে। এই পিঠা বানাতে লাগে চাউলের আটা, খেজুর গুড়, নারিকেল কোরা ও হালকা বিশুদ্ধ পানি।

এটা বানাতে মাটির ছাঁচ লাগে। এই ছাঁচ বাজারে সহজলভ্য। যেকোনো কুমারের দোকানে অর্থাৎ যারা মাটির তৈরী জিনিস বিক্রি করে তাদের কাছ থেকেই এই ছাঁচ সহজে পাওয়া যায়। এই পিঠা দুই ভাবে বানানো যায়। এটা শুকনো ভাবে খাওয়া যায় আবার দুধের সেরা করে ভিজিয়ে খাওয়া যায়। তো শুরু করা যাক ভাপা পিঠা বানানোর কৌশল।

প্রস্তুত প্রণালী- প্রথমে পানির পাত্রটিতে পানি ঢেলে গরম করতে হবে। এরপর পানির ভাপ উঠা শুরু হলে ছাঁচের অর্ধেকে চালের আটা দিতে হবে। তারপর নারিকেল কোরা ও গুড় মধ্যে দিতে হবে এবং বাকি অর্ধেক আবার চালের আটা দিয়ে পূর্ণ করে শুকনো সুতার কাপড় জড়িয়ে ভাপের উপর ছেড়ে দিতে হবে। একটু পরে হয়ে যাবে গরম গরম ভাপা পিঠা। 

শেষ কথা

শীতে অনেক রকম পিঠা হয়। নানা ধরণের এই পিঠা গুলো নানা স্বাদের হয়। পিঠা খেতে কার না ভালো লাগে। প্রায় সব বয়সের মানুষই পিঠা খেতে পছন্দ করে। আর শীতে তো পিঠা-পুলি খাওয়ার ধুম পড়ে। শীতের পিঠা-পুলি মানুষের মনে এক অন্য রকম অনুভূতি যোগায়।

আপনাদের যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে, তবে অবশ্যি কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে। আরও নতুন পিঠা বানানোর কৌশল জানতে চাইলে এই বিষয়ে পোস্ট লেখার কমেন্ট করুণ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url