বাইনারি ট্রেডিং কি হালাল-বাইনারি ট্রেডিং কি বাংলাদেশে বৈধ

বাইনারি ট্রেডিং কি হালাল-বাইনারি ট্রেডিং কি বাংলাদেশে বৈধ এই আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারবেন বাইনারি ট্রেডিং হালাল না কি হারাম ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে এবং এটি বাংলাদেশে বৈধতা আছে কিনা সে সম্পর্কে বিস্তারিত।

বাইনারি-ট্রেডিং-কি-হালাল-বাইনারি-ট্রেডিং-কি-বাংলাদেশে-বৈধবাইনারি ট্রেডিং বর্তমান সময়ে অনেক আলোচিত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই পদ্ধতিতে অর্থ উপার্জনের সুযোগ যেমন আছে তেমনি এর অনেক ঝুঁকিও রয়েছে। তবে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি এবং বাংলাদেশের আইন কাঠামোতে এর বৈধতাতে নিয়ে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা যায়।

পেজ সূচিপত্রঃ বাইনারি ট্রেডিং কি হালাল-বাইনারি ট্রেডিং কি বাংলাদেশে বৈধ

বাইনারি ট্রেডিং কি হালাল-বাইনারি ট্রেডিং কি বাংলাদেশে বৈধ

বাইনারি ট্রেডিং কি হালাল-বাইনারি ট্রেডিং কি বাংলাদেশে বৈধ চলুন এই সম্পর্কে এখন বিস্তারিত জেনে নেই। নিম্নে আপনাদের মাঝে বাইনারি ট্রেডিং কি হালাল-বাইনারি ট্রেডিং কি বাংলাদেশে বৈধ বিষয়টি বিশদভাবে বর্ণনা করা হলো।

বাইনারি ট্রেডিং হলো একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ট্রেডাররা নির্দিষ্ট একটি সম্পদের মূল্য বৃদ্ধির বা হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়ে বিনিয়োগ করে থাকে। এটি জনপ্রিয় হলেও এটি ধর্মীয় ও আইনের বৈধতা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে।

বাইনারি ট্রেডিং এমন একটি পদ্ধতি যেখানে ট্রেডাররা পূর্বাভাস দেন যে কোনো সম্পদের যেমন [ স্টক, কারেন্সি, ক্রিপ্টোকারেন্সি ] মূল্য নির্দিষ্ট সময় পরে বৃদ্ধি পাবে নাকি হ্রাস পাবে এ বিষয় সম্পর্কে।উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি পূর্বাভাস দেন যে এক মিনিট পর [ EUR বা USD ] এর মূল্য বাড়বে, এবং আপনার পূর্বাভাস সঠিক হয়, তবে আপনি লাভ করবেন।

এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেমন এটা পূর্বানুমান-নির্ভর, খুব দ্রুত ফলাফল পাওয়া যায় এক মিনিট থেকে ৫ মিনিটের মধ্যেই, লাভ এবং ক্ষতির হার নির্দিষ্ট। নিম্নের বিষয়গুলোতে বাইনারি টেডিং হালাল নাকি হারাম এবং ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে কেমন এবং বাংলাদেশের বৈধতা আছে কিনা বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।

বাইনারি ট্রেডিং সংজ্ঞা ও ইসলামিক দৃষ্টিকোণ

বাইনারি ট্রেডিং সংজ্ঞা ও ইসলামিক দৃষ্টিকোণ এখন এ বিষয়টি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করা হবে।বাইনারি ট্রেডিং কি হালাল-বাইনারি ট্রেডিং কি বাংলাদেশে বৈধ এই প্রবন্ধে এ বিষয়টি নিম্নে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।

বাইনারি ট্রেডিং হালাল নাকি হারাম এ বিষয়টি ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিতর্কিত। এটি নির্ভর করে বিভিন্ন ফতোয়া ও ব্যাখ্যার উপর।

বাইনারি ট্রেডিং এর সংজ্ঞা
বাইনারি ট্রেডিং হলো এক ধরনের আর্থিক লেনদেন যেখানে আপনি একটি নির্দিষ্ট সময়ে কোন সম্পদের মূল্য বৃদ্ধি বা হ্রাস সম্পর্কে পূর্বানুমান করতে পারেন বা করেন। সঠিক হলে আপনার লাভ হয় আর ভুল হলে আপনাকে পুনরায় বিনিয়োগ করতে হয়।

বাইনারি ট্রেডিং সম্পর্কে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ

যে বিষয় সম্পর্কে আলোচনা হবে
  • আসল সম্পদের মালিকানা
  • জুয়া ও অনিশ্চয়তা
  • বিশেষজ্ঞদের মতামত

  • আসল সম্পদের মালিকানা- অনেক ক্ষেত্রে বাইনারি ট্রেডিং প্রকৃত সম্পদ কেনাবেচা হয় না, বরং কেবল একটি পূর্বাভাস। এটি ইসলামে অবৈধ।
  • জুয়া ও অনিশ্চয়তা- বাইনারি ট্রেডিং অনেক সময় জুয়ার মত হয়। যেখানে লেনদেনের ভিত্তি মূলত অনুমান। ইসলামে জুয়া বা গারার নিষিদ্ধ করেছে।
  • বিশেষজ্ঞদের মতামত- অধিকাংশ ইসলামী স্কলারশিপদের মতে বাইনারি ট্রেডিং হারাম বলে মনে করেন। কারণ এটি জুয়া এবং সুদ [ রিবা ] এর সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।
আলোচনা শেষে বলা যায় যে, ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটা হালাল নয় অর্থাৎ বাইনারি ট্রেডিং হালাল নয়।

বাংলাদেশে বাইনারি ট্রেডিং কি বৈধ

বাংলাদেশে বাইনারি ট্রেডিং কি বৈধ চলুন এ বিষয়টি এবার আমরা বিস্তারিত জেনে নেই। বাইনারি ট্রেডিং কি হালাল-বাইনারি ট্রেডিং কি বাংলাদেশে বৈধ এই আর্টিকেলে এ বিষয়টি আপনাদের মাঝে নিম্নে তুলে ধরা হলো।

বাইনারি টেডিং একটি বিনিয়োগের পদ্ধতি, যেখানে ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি সম্পদের মূল্য বাড়বে নাকি কমবে তার পূর্বাভাস দিয়ে থাকে। এটি সাধারণত দ্রুত মুনাফার জন্য একটি পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত।

বাংলাদেশে বৈধ কিনা অবৈধ
  • বাংলাদেশে এই বাইনারি ট্রেডিং সরাসরি বৈধ নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের [ BSEC ] নিয়ম অনুযায়ী বিদেশী মুদ্রা লেনদেন এবং অনুমোদিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া এ ধরনের কার্যক্রম অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।
  • এছাড়াও বাইনারি ট্রেডিংকে জুয়ার সাথে তুলনা করা হয় এবং সেই সাথে এটি প্রায়শই প্রতারণার ঝুঁকি বহন করে। তাই বাংলাদেশের এর ব্যবহার অনেক ঝুঁকিপূর্ণ এবং এটা আইনসম্মত নয়।
উপরের আলোচনা হতে বোঝা যায় যে বাংলাদেশে এটি বৈধ নয়। তাই এটি থেকে দূরে থাকা উচিত।

বাইনারি ট্রেডিং এর বিভিন্ন কার্যপ্রণালী

বাইনারি ট্রেডিং এর বিভিন্ন কার্যপ্রণালী সম্পর্কে চলুন এখন আমরা এ বিষয়টি বিস্তারিত জেনে নেই।বাইনারি ট্রেডিং কি হালাল-বাইনারি ট্রেডিং কি বাংলাদেশে বৈধ এই আর্টিকেলে এখন আমরা আপনাদের মাঝে বাইনারি ট্রেডিং এর বিভিন্ন কার্যপ্রণালী সম্পর্কে নিম্নে তুলে ধরবো।
বাইনারি-ট্রেডিং-এর-বিভিন্ন-কার্যপ্রণালী
যে বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হবে
  • বিনিয়োগ নির্বাচন
  • সময়সীমা নির্ধারণ
  • বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ধারণ
  • পূর্বাভাস দেওয়া
  • ফলাফল

  • বিনিয়োগ নির্বাচন- আপনি যে কোনো একটি সম্পদ বেছে নিতে পারেন। যেমন ধরুন সোনার দাম বা রুপোর দাম এরকম বিষয়।
  • সময়সীমা নির্ধারণ- এক মিনিট অথবা পাঁচ মিনিট বা অন্য যেকোনো নির্দিষ্ট সময় আপনি বেছে নিতে পারবেন বা নির্ধারণ করতে পারবেন।
  • বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ধারণ- একটি নির্দিষ্ট অংকের অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে। সেটা যেকোনো উপায়ে সেই অর্থ সেখানে বিনিয়োগ করতে হবে। 
  • পূর্বাভাস দেওয়া- মূল্য বাড়বে নাকি কমবে তা নির্ধারণ করতে হবে।
  • ফলাফল- পূর্বাভাস সঠিক হলে লাভ হবে অন্যথায় সম্পূর্ণ বিনিয়োগ হারাতে হবে।

ইসলামের দৃষ্টিতে বাইনারি ট্রেডিং কি হালাল

ইসলামের দৃষ্টিতে বাইনারি ট্রেডিং কি হালাল চলুন এ বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই। আগের বর্ণনায় বলা হয়েছে যে ইসলামের দৃষ্টিতে বাইনারি ট্রেডিং বৈধ নয়। ইসলামের দৃষ্টিতে বাইনারি ট্রেডিং কেন বৈধ নয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত নিম্নে তুলে ধরা হলো।

  • ইসলামের দৃষ্টিতে বাইনারি ট্রেডিং বৈধ নয় এর মূল কারণ এটি জুয়ার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। বাইনারি ট্রেডিং এর কার্যপ্রণালী অনেকটাই জুয়ার মতো। এখানে পূর্বাভাস সঠিক যদি না হয় তাহলে অর্থ হারানোর সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে বোঝা যায় যে এটি জুয়ার সাথে সাদৃশ্য রয়েছে।
  • ইসলামের দৃষ্টিতে বাইনারি ট্রেডিং বৈধ নয় এর আরেকটি কারণ হচ্ছে এটি সুদের মতো অর্থাৎ অনেক ক্ষেত্রে বাইনারি ট্রেডিং পদ্ধতিতে সুদের অন্তর্ভুক্ত থাকে। যা ইসলামের সম্পূর্ণ হারাম।
  • ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে বাইনারি ট্রেডিং বৈধ নয় এর আরেকটি কারণ হচ্ছে বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থ। বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থ ও ফিকহ শাস্ত্রে এটা হারাম বলে ঘোষণা করেছে। বিভিন্ন মুফতি ও ইসলামিক স্কলারশিপগণ হারাম বলেছে। এ কারণেই ঘোষণা করা হয়েছে যে এতে ঝুঁকি অনিশ্চিত এবং সুদের উপাদান থাকে।

বাংলাদেশে বাইনারি ট্রেডিং এর কি বৈধতা হবে

বাংলাদেশে বাইনারি ট্রেডিং এর কি বৈধতা হবে এ বিষয়ে এখনো কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশে বাইনারি ট্রেডিং সরাসরি নিষিদ্ধ নয়, আবার এটি একটি সুনির্দিষ্ট আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিতও নয়।নিম্নে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

  • বাংলাদেশ ব্যাংকের দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে একটি বিষয় বিবেচনা করা হয় বা দেখা যায় যে, ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রেডিং বা বাইনারি ট্রেডিং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত নয়।
  • বৈদেশিক মুদ্রার একটি আইন রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে বাইনারি ট্রেডিং এর নীতিমালা অনুমোদিত নয়।
  • আইনগত ঝুঁকি রয়েছে যেহেতু বাইনারি ট্রেডিং এর কোন সুনির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ নেই তাই ট্রেডাররা প্রতারণার শিকার হতে পারেন।

বাইনারি ট্রেডিং এর কিছু ঝুঁকি এবং সতর্কতা

বাইনারি ট্রেডিং এর কিছু ঝুঁকি এবং সতর্কতা আমাদের জানা দরকার কেননা আমাদের এ বিষয়ে জানা থাকলে আমরা বিভিন্ন ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাব এবং সতর্কতার সেই চললে আমরা ভালোভাবে থাকতে পারবো। নিম্নে এই বিষয়টি আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হলো।
বাইনারি-ট্রেডিং-এর-কিছু-ঝুঁকি-এবং-সতর্কতা

  • এতে উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে সম্পূর্ণ অর্থ হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
  • অনেক অপ্রতিষ্ঠিত বেকার গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা হয়।
  • বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী আপনি প্রতারিত হলে আইনি প্রতিকার পেতে অসুবিধা হতে পারে।
  • অধিকাংশ মানুষ সঠিক ধারণা ছাড়া এতে বিনিয়োগ করে থাকে।
  • বিনিয়োগের আগে ভালোভাবে শিখুন এবং গবেষণা করুন।
  • আইনীয় ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিন।

শেষ মন্তব্য

বাইনারি ট্রেডিং একটি আকর্ষণীয় প্ল্যাটফর্ম হলে একটি ধর্মীয় আইন বৈধতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ইসলামিক মূল্যবোধ অনুসারে এটি জুয়ার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ এবং এটি হারাম হিসেবে বিবেচিত।

বাংলাদেশে এটি স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ না হলে এর কোনো সুনির্দিষ্ট আইনি কাঠামো নেই। তাই এটা  বিনিয়োগকারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url