বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি - বিদেশ যাওয়ার এ টু জেড উপায়

বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি এই আর্টিকেলে আপনাদের মাঝে বিদেশ যাওয়ার সকল এজেন্সি ও বিদেশ যাওয়ার এ টু জেড উপায় গুলো বিস্তারিত তুলে ধরবো। আশা করি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

বিদেশ-যাওয়ার-সরকারি-এজেন্সিমানুষ বিদেশ যায় বিভিন্ন উদ্দেশ্যের উপর ভিত্তি করে। কেউ যায় শিক্ষার জন্য, কেউ যায় ব্যবসার জন্য আবার কেউ যায় চাকরি ও কর্মসংস্থানের জন্য। তবে বিদেশ যেতে হলে কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়, যা সরকারি সংস্থার নানা ধরনের সেবার প্রয়োজন পড়ে।

সূচিপত্রঃ বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি - বিদেশ যাওয়ার এ টু জেড উপায়

বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি

বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের মাঝে বিদেশ যাওয়ার এ টু জেড উপায় সম্পর্কে আলোচনা করবো। সেই সাথে বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সির বিভিন্ন প্রকারভেদ এবং কিভাবে যেতে হবে তার কয়েকটি ধাপ এ সকল সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরবো। পাশাপাশি বিদেশ গমনের উদ্দেশ্য গুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।

বিদেশ যেতে হলে আমাদের কিছু নিরাপত্তা প্রতারণার টিপস জানতে হবে পাশাপাশি বিদেশ গেলে সরকারের পরামর্শ ও নিয়ম কানুন গুলো জানতে হবে। বিদেশ যাওয়ার আগে ইন্টারভিউ ও মেডিকেল পরীক্ষা দিতে হয়। আমাদের কিছু প্রয়োজনীয় নথিপত্র দরকার পড়ে। কিভাবে আবেদন করতে হবে তার বিভিন্ন ধাপ সম্পর্কে জানতে হয়। এই সকল কিছুই এই প্রবন্ধে আপনাদের মাঝে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।

আশা করি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। যেন আপনারা সহজেই বিদেশ যাওয়ার এ টু জেড উপায় গুলো ভালোভাবে বুঝতে পারেন। সেই সাথে বিদেশ যাওয়ার কোন ক্ষেত্রে কোন এজেন্সি গুলো ব্যবহার হয় এবং যে প্রক্রিয়া ধাপ গুলো আছে সে সম্পর্কে আপনি জেনে সঠিকভাবে কাজ করতে পারবেন।

বিদেশ গমনের বিভিন্ন উদ্দেশ্য

বিদেশ গমনের বিভিন্ন উদ্দেশ্য এই বিষয়টি বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি আর্টিকেলে এখন আমরা বিস্তারিত তুলে ধরবো। বিভিন্ন কারণে মানুষ বিদেশ যেতে চায় এবং প্রতিটি উদ্দেশ্যের জন্য নির্দিষ্ট ধারনের ভিসা ও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার প্রয়োজন পড়ে। নিম্নে বিদেশ গমনের বিভিন্ন উদ্দেশ্য তুলে ধরা হলো।

যে সকল উদ্দেশ্যে মানুষ বিদেশ গমন করে
  • সামরিক ও কূটনৈতিক দায়িত্ব পালনে
  • আন্তর্জাতিক সংস্থায় চাকরি হলে
  • ইন্টারসিপ এবং কর্মশিক্ষার জন্য
  • গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য
  • ক্রিয়া ও প্রতিযোগিতায়
  • শিল্প-সংস্কৃতি এবং বিনোদনের ক্ষেত্রে
  • পর্যটন ও ভ্রমণ
  • চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবার জন্য
  • ব্যবসা ও বিনিয়োগ
  • উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য
  • চাকরি ও কর্মসংস্থানের জন্যে
  • ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্যে
  • পরিবার পুনর্মিলন ও সাক্ষাৎ এর জন্যে
  • অভিভাষণ ও স্থায়ী বসবাসের উদ্দেশ্যে

মূলত উপরে বর্ণিত এ সকল কারণে বা এ ধরনের উদ্দেশ্যের কারণে মানুষ বিদেশ ভ্রমণ করে থাকে।

সরকারি এজেন্সির বিভিন্ন প্রকারভেদ

সরকারি এজেন্সির বিভিন্ন প্রকারভেদ এ বিষয়টি বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি এই আর্টিকেলে বিস্তারিত এখন আলোচনা করা হবে। বিদেশ গমনের বিভিন্ন উদ্দেশ্যের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের সরকারি সংস্থা কাজ করে থাকে। নিম্নে সরকারি এজেন্সির বিভিন্ন প্রকারভেদ আলোচনা করা হলো।

যেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হবে
  • শিক্ষা সংক্রান্ত সরকারি এজেন্সি
  • সরকারি এজেন্সির মধ্যে চাকরি সংক্রান্ত
  • অভিবাসন সংক্রান্ত সরকারি সংস্থা
  • স্বাস্থ্য চিকিৎসা সংক্রান্ত সরকারি সংস্থা
  • পর্যটন ও ভ্রমণ সংক্রান্ত সংস্থা
  • বাণিজ্য বিনিয়োগ সংস্থা

শিক্ষা সংক্রান্ত সরকারি এজেন্সি

বিদেশি উচ্চ শিক্ষা বা প্রশিক্ষণের জন্য বিভিন্ন সরকারি সংস্থা সহায়তা প্রদান করে থাকে। এই সংস্থাগুলো বিভিন্ন ধরনের বৃত্তি প্রোগ্রাম শিক্ষার্থী ভিসার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া এবং নথিপত্রের ব্যবস্থাপনা করে থাকে। যেমন-

  • শিক্ষা মন্ত্রণালয়
  • বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষাবৃত্তি সংক্রান্ত সংস্থা

সরকারি এজেন্সির মধ্যে চাকরির সংক্রান্ত

যারা বিদেশ চাকরির জন্য যেতে চান তাদের জন্য নির্দিষ্ট সরকারি সংস্থা রয়েছে। যা সঠিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে সাহায্য করে থাকে। এই সংস্থাগুলো বিদেশি নিয়োগকর্তার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এবং ভিসা প্রক্রিয়া সহায়তা করে থাকে। যেমন-

  • ব্যুরো অফ ম্যানপাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট এন্ড ট্রেনিং (বিএমইটি)
  • জনশক্তি উন্নয়ন ব্যুরো

অভিবাসন সংক্রান্ত সরকারি সংস্থা

অভিবাসনের জন্য ভিসা এবং বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য অভিবাসন সংক্রান্ত সরকারি এজেন্সি কাজ করে থাকে। অভিবাসন আইন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের জন্য এই সংস্থাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয়। যেমন-

  • ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সরকারি সংস্থা

চিকিৎসার জন্য বিদেশ গমনের প্রক্রিয়া অনেক ক্ষেত্রে জটিল হয় চিকিৎসার জন্য বিশেষ ভিসার ব্যবস্থা করতে হয় এবং প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহে এ ধরনের সরকারি সংস্থাগুলো সহায়তা করে থাকে। যেমন-

  • স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়
  • স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

পর্যটন ও ভ্রমণ সংক্রান্ত সংস্থা

পর্যটন বা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে পর্যটন সংক্রান্ত সরকারি সংস্থাগুলো নানান তথ্য ও নথিপত্র সংক্রান্ত সহায়তা প্রদান করে থাকে। যেমন-

  • পর্যটন কর্পোরেশন
  • বিদেশী মিশন ও কনস্যুলেট সেবা বিভাগ

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংস্থা

ব্যবসা বা বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে যারা বিদেশ যেতে চান, তাদের জন্য সরকারি সংস্থাগুলো সহায়তা প্রদান করে থাকে। ব্যবসায়িক সহযোগিতা, বিনিয়োগ সুযোগ এবং অন্যান্য সম্পর্কিত নথিপত্র প্রদানে তারা সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন-

  • বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
  • বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)

এছাড়া আরো কয়েকটি সংস্থা রয়েছে যেমন - দূতাবাস বা কনসুলেট সেবা, আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা, সংস্থা, সাংস্কৃতিক ও ক্রিড়া সংস্থা, নাগরিক সুরক্ষা এবং প্রতারণা প্রতিরোধ সংস্থা।

আরও পড়ুনঃ জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই ও এর গুরুত্ব

বিদেশ যেতে প্রয়োজনীয় নথিপত্র

বিদেশ যেতে প্রয়োজনীয় নথিপত্র দরকার পড়ে। এজন্য এ সম্পর্কে জানা আমাদের জরুরী। আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রস্তুত করতে হয়। নিম্নে প্রয়োজনীয় নথিপত্র গুলো উল্লেখ করা হলো।
বিদেশ-যেতে-প্রয়োজনীয়-নথিপত্র
  • পাসপোর্ট {সঠিক মেয়াদে}
  • শিক্ষা সনদপত্র {এটা শিক্ষা ভিসার জন্য}
  • কর্মসংস্থানের প্রমাণপত্র {চাকরি ভিসার জন্য}
  • মেডিকেল রিপোর্ট {চিকিৎসার জন্য}
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা আর্থিক সনদ
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট

বিদেশ যেতে হলে এ সকল নথিপত্র গুলো অবশ্যই প্রয়োজন। তাই যে ক্ষেত্রে আপনি বিদেশ যাবেন এ সকল নথিপত্র গুলো ঠিকঠাক করে কাজ করবেন।

বিদেশ যেতে হলে ইন্টারভিউ এবং মেডিকেল পরীক্ষা

বিদেশ যেতে হলে ইন্টারভিউ এবং মেডিকেল পরীক্ষা দিতে হয়। এটি কিছু কিছু ভিসার ক্ষেত্রে দূতাবাস বা ভিসা সেন্টারে ইন্টারভিউ দিতে হয়। নিম্নে এই সম্পর্কে তুলে ধরা হলো।

অনেক সময় ইন্টারভিউ দিতে হয় বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে। এ সময় ইন্টারভিউতে আবেদনকারী ভ্রমণের উদ্দেশ্য আর্থিক স্থিতি এবং অন্যান্য তথ্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। ইন্টারভিউ এর জন্য উপযুক্ত প্রস্তুতি নেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

কিছু ক্ষেত্রে ভিসার জন্য মেডিকেল পরীক্ষা আবশ্যক। কিছু দেশে ভিসার জন্য মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়। নির্দিষ্ট ক্লিনিক বা হাসপাতাল থেকে আপনি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে মেডিকেল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে পারেন। সংগৃহীত সার্টিফিকেট আপনি যেখানে প্রয়োজন সেখানে পরে প্রয়োগ করতে পারবেন।

সরকারি এজেন্সিগুলোর প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট এবং হটলাইন

সরকারি এজেন্সিগুলোর প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট এবং হটলাইন সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সরকারি এজেন্সির ওয়েবসাইট এবং হটলাইন নাম্বারগুলো বিদেশ যাওয়ার সরকারি এজেন্সি আর্টিকেলে আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম।

জাতীয় কল সেন্টার
  • হটলাইনঃ ৩৩৩
  • উদ্দেশ্যঃ বিভিন্ন সরকারি তথ্য ও সেবার জন্য একক কল সেন্টার, যেখান থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও সহযোগিতা পাওয়া যাবে।

বিশ্বব্যাপী অভিবাসী এবং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়
  • ওয়েবসাইটঃ www.probashi.gov.bd
  • হটলাইনঃ +৮৮০-২-৫৫০৭৩৫৩০
  • উদ্দেশ্যঃ প্রবাসীদের কল্যাণ এবং অভিবাসীদের কর্মীদের সুরক্ষার জন্য সহায়তা।

বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড
  • ওয়েবসাইটঃ www.educationboard.gov.bd
  • হট লাইনঃ + ৮৮০-২-৯৬৬২৪১০
  • উদ্দেশ্যঃ শিক্ষা সনদের প্রমাণীকরণ এবং বৈধকরণ সেবা।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্ভিস
  • ওয়েবসাইটঃ pcc.police.gov.bd
  • হটলাইনঃ +৮৮০-২-৯৩৪৫৯৬৯
  • উদ্দেশ্যঃ বিদেশ ভ্রমণের জন্য পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ প্রদান।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়
  • ওয়েবসাইটঃ www.moedu.gov.bd
  • হটলাইনঃ +৮৮০-২-৯৫৪৫৫৬৫
  • উদ্দেশ্যঃ উচ্চ শিক্ষা ও শিক্ষাবৃত্তি বিষয়ক নির্দেশনা।

ব্যুরো অফ ম্যানপাওয়ার, এমপ্লয়মেন্ট এন্ড ট্রেনিং [বিএমইটি]
  • ওয়েবসাইটঃ www.bmet.gov.bd
  • হটলাইনঃ ১৬১৩৪
  • উদ্দেশ্যঃ বিদেশে কর্মস্থান প্রক্রিয়া প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর
  • ওয়েবসাইটঃ www.dip.gov.bd
  • হটলাইনঃ +৮৮০-২-৫৫০৭৫৪১৩
  • উদ্দেশ্যঃ পাসপোর্ট এবং ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত সহায়তা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
  • ওয়েবসাইটঃ www.dghs.gov.bd
  • হটলাইনঃ ১৬২৬৩
  • উদ্দেশ্যঃ চিকিৎসা ভিসা এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা সংক্রান্ত তথ্য।

পর্যটন কর্পোরেশন
  • ওয়েবসাইটঃ www.parjatan.gov.bd
  • হট লাইনঃ +৮৮০-২-৫৫০০০১৩৫
  • উদ্দেশ্যঃ পর্যটন সম্পর্কিত তথ্য ও পরামর্শ প্রদান।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ [বিডা]
  • ওয়েবসাইটঃ www.bida.gov.bd
  • হটলাইনঃ০৯৬১০৬৬৬৭৭৭ 
  • উদ্দেশ্যঃ বিদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত সহায়তা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
  • ওয়েবসাইটঃ www.mofa.gov.bd
  • হট লাইনঃ +৮৮০-২-৯৫৬২৯৫২
  • উদ্দেশ্যঃ বিদেশে নিরাপত্তা এবং কূটনৈতিক সহায়তা।

জাতীয় প্রতিযোগিতা কমিশন
  • ওয়েবসাইটঃ www.ccb.gov.bd
  • হটলাইনঃ +৮৮০-২-৫৫০০৭৩৪২
  • উদ্দেশ্যঃ প্রতারণা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য প্রদান।

বাংলাদেশ দূতাবাস ও কনসুলেট অফিস
  • ওয়েবসাইট সংসদীয় দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে সাধারণ ওয়েবসাইটঃ www.embassy.gov.bd
  • হটলাইনঃ নির্দিষ্ট দেশের দূতাবাসের নাম্বার।
  • উদ্দেশ্যঃ প্রবাসীদের জন্য কনস্যুলার সেবা এবং ভিসা তথ্য।
উপরোক্ত এই এজেন্সি গুলোর ওয়েবসাইট ও হট লাইনের মাধ্যমে আবেদনকারীরা তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য সেবা দ্রুত পাবেন।

বিদেশ যেতে আবেদন প্রক্রিয়ার ধাপসমূহ

বিদেশ যেতে আবেদন প্রক্রিয়ার ধাপসমূহ এখন আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো। আবেদন প্রক্রিয়া বেশ কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। এই ধাপগুলোতে সঠিক নথিপত্র প্রস্তুত যাচাই-বাছাই এবং অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। নিম্নে বিদেশ যাওয়ার আবেদন প্রক্রিয়ার ধাপসমূহ উল্লেখ করা হলো।
বিদেশ-যেতে-আবেদন-প্রক্রিয়ার-ধাপসমূহ
উদ্দেশ্য নির্ধারণ
প্রথমেই আমাদের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে হবে। যেমন উচ্চশিক্ষা, চাকরি, অভিবাসন, চিকিৎসা, পর্যটন ইত্যাদি। উদ্দেশ্য অনুযায়ী সঠিক ভিসার ধরন নির্বাচন করতে হয়।

নির্ভরযোগ্য সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ
নির্ধারিত উদ্দেশ্যের জন্য সরকারি এজেন্সি বা অনুমোদিত সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ নিশ্চিত করতে হবে। যেমন- [বিএমইটি] চাকরির জন্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয় উচ্চ শিক্ষার জন্য, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চিকিৎসার জন্য প্রাসঙ্গিক সেবা প্রদান করে থাকে।

আবেদন ফরম পূরণ
নির্দিষ্ট ভিসার জন্য আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। এই ফরমটি নির্ধারিত সরকারি সংস্থা বা দূতাবাসের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। আবেদন ফরমটি সঠিক এবং নির্ভুলভাবে পূরণ করতে হবে।

প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ ও প্রস্তুতি
আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রস্তুত করতে হবে। যেমন পাসপোর্ট, শিক্ষা সনদ, কর্মসংস্থানের প্রমাণ, মেডিকেল রিপোর্ট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স।

আবেদন ফি প্রদান
এর পরে আপনাকে আবেদন ফি প্রদান করতে হবে। নির্ধারিত ফি প্রদান করার পর এর প্রাপ্তি রশিদ সংরক্ষণ করবেন। কারণ এটি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জমা দিতে হতে পারে।

ভিসা সেন্টারে আবেদন জমা
সব নদীপত্র প্রস্তুতির পর আপনাকে দূতাবাস বা নির্দিষ্ট ভিসা সেন্টারে আবেদন জমা দিতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়া যায়। জমা দেওয়ার সময় আবেদন ফরম এর সঙ্গে সমস্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংযুক্ত করতে হবে।

আবেদন যাচাই এবং নথিপত্র যাচাই-বাছাই
আবেদন জমা দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নথিপত্র যাচাই করে দেখে যে সকল তথ্য সঠিক আছে কিনা বা সম্পূর্ণ আছে কিনা। এতে কিছুটা সময় লাগে এজন্য আবেদনকারীকে এটি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।

ইন্টারভিউ বা সাক্ষাৎকার
এরপর রয়েছে ইন্টারভিউ, কিছু ভিসার ক্ষেত্রে দূতাবাস বা ভিসা সেন্টারে ইন্টারভিউ দিতে হয়। ইন্টারভিউতে আবেদনকারীর ভ্রমণের উদ্দেশ্য আর্থিক স্থিতি এবং অন্যান্য সকল সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। এ সকল প্রশ্নের উত্তর যথাযথভাবে দিতে হবে।

মেডিকেল পরীক্ষা
যদি মেডিকেল পরীক্ষার প্রয়োজন হয় তাহলে মেডিকেল পরীক্ষা করতে হবে। কেননা কিছু দেশে ভিসার জন্য মেডিকেল পরীক্ষা আবশ্যক। আপনি নির্দিষ্ট ক্লিনিক বা হাসপাতাল থেকে মেডিকেল পরীক্ষা করে মেডিকেল সনদ বা সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে পারেন।

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এবং নিরাপত্তা যাচাই
এরপরে আপনাকে বা আপনার সকল তথ্য একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।এটি আবেদনকারীর অপরাধমূলক রেকর্ড নেই নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।

ভিসা প্রক্রিয়াকরণ এবং অনুমোদন
সমস্ত নথি যাচাই এবং প্রক্রিয়ার পর সংস্কৃত কর্তৃপক্ষ ভিসা অনুমোদন প্রদান করে। এটি পেতে কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। একবার ভিসা অনুমোদিত হলে আবেদনকারীকে ভিসা প্রদান করা হয়।

ফ্লাইট বুকিং এবং ভ্রমণের পরিকল্পনা
ভিসা পাওয়া পর আবেদনকারী তার ভ্রমণের তারিখ নির্ধারণ করে এবং ফ্লাইট টিকিট বুক করে। ভ্রমণের আগে তার নির্দিষ্ট গন্তব্য দেশের নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

প্রস্থানের প্রস্তুতি এবং নির্দেশনা গ্রহণ
ভ্রমণের আগের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রয়োজনের জিনিসপত্র, ওষুধ পত্র এবং জরুরি যোগাযোগ নাম্বার সংরক্ষণ করতে হবে।

প্রস্থান এবং অভিবাসন প্রক্রিয়া
বিমানবন্দরে পৌঁছে দেশ ত্যাগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। অভিবাসন প্রক্রিয়ায় পাসপোর্ট, ভিসা এবং অন্যান্য নথি যাচাই হয়। অনুমোদনের পর আবেদনকারী গন্তব্য দেশে প্রবেশের অনুমতি পান।

উপরিক্ত ধাপগুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করলে বিদেশ যাওয়ার আবেদন প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়।

বিদেশ যেতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক পরামর্শ

বিদেশ যেতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক পরামর্শ গুলো চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক। বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যা জীবনের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এখানে আপনাদের মাঝে কিছু মূল বিষয় তুলে ধরা হলো যা আপনার সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হতে পারে।

  • প্রথমে আপনার উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে হবে। যেমন- উচ্চতর শিক্ষা, চাকরি বা কর্মসংস্থান, ব্যবসা বা বিনিয়োগ, স্থায়ী বসবাস, ভ্রমণ অভিজ্ঞতা অর্জন ইত্যাদি।
  • তারপর আপনাকে নির্দিষ্ট দেশ নির্বাচন করতে হবে। দেশ নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনি আপনার বাজেট, উদ্দেশ্য এবং আগ্রহের উপর নির্ভর করে। যেমন জীবনযাত্রা মানের ওপর। আবহাওয়া, ভাষা, বিচিত্রতা ও সংস্কৃতি।
  • বিদেশ যাওয়ার জন্য অর্থনৈতিক প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রথমে আপনার প্রাথমিক যে খরচ টিকেট, ভিসা, আবাসন ও বিমা ইত্যাদির জন্য। তারপরে জীবনযাত্রা ব্যায়ের জন্য এরপরে বীমা বা স্বাস্থ্য সেবার জন্য।
  • অভিবাসন প্রক্রিয়া ও ভিসা প্রয়োজন হলে। অভিবাসনের নিয়মে প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে ভিসার ধরন যেমন স্টুডেন্ট ভিসা, ওয়ার্ক ভিসা, টুরিস্ট ভিসা ইত্যাদি। আবার ভিসা পেতে নথিপত্র, পাসপোর্ট, আর্থিক সাপোর্ট, প্রমাণ শিক্ষাগত, চাকরি তথ্য ইত্যাদি। এরপরে আবেদন প্রক্রিয়ার সময়কাল ভিসার জন্য আবেদন প্রক্রিয়ায় যে এটি পেতে কত সময় লাগবে তা জানা।
  • সাংস্কৃতিক এবং মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে বা এটা নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বিভিন্ন দেশে সংস্কৃতির পার্থক্য থাকে এবং স্থানীয় ভাষা থাকে এক্ষেত্রে আপনাকে সেই ভাষা বা সংস্কৃতির ক্ষেত্রে মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে।
  • সামাজিক ও পারিবারিক সমর্থন থাকতে হবে। কেননা আপনি বিদেশ যাওয়ার আগে তারা আপনার মনবল কে দৃড় করবে ও মানসিক স্থিরতা বাড়াতে আপনাকে সাহায্য করবে।
  • আইনগত নিয়মাবলী মেনে চলা, যে দেশে যাবেন সে দেশের স্থানীয় আইন ও সামাজিক আইন রয়েছে সেগুলো আপনাকে মেনে চলতে হবে। ট্যাক্স ও কর নিয়ম অনুযায়ী আপনাকে দিতে হবে।
  • স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে। আপনার স্বাস্থ্য বীমা এবং প্রয়োজনের চিকিৎসা সম্পর্কে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে।
  • বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে হলে আপনাকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। যেমন নাগরিকত্ব স্থায়ী বসবাসের সুবিধা পাওয়ার একটা সুযোগ, আবার ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক স্বার্থ সংরক্ষণ করা।

শেষ মন্তব্য

উপরিউক্ত আলোচনা আপনি যদি সঠিকভাবে মেনে চলেন তাহলে বিদেশ যাওয়ার জন্য আপনি সঠিক ভাবে প্রস্তুত। উপরে বর্ণিত সরকারি এজেন্সির সকল কিছু আপনাদের মাঝে তুলে ধরেছি। আশা করি আপনি এগুলো পড়ে উপকৃত হবেন।

বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনি যদি এগুলো সঠিক ভাবে মেনে চলেন তবে বিদেশ যাওয়া থেকে শুরু করে বিদেশ থাকার ক্ষেত্রে আপনার কোনো সমস্যা হবেনা। আশা করি বিদেশ যাওয়ার এই তথ্য ও উপায় গুলো আপনার অনেক ভালো লেগেছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url