দুধ চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - একটি সম্পূর্ণ গাইড
দুধ চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের মাঝে দুধ চা খাওয়া সম্পর্কে সম্পূর্ণ গাইড তুলে ধরবো। আপনি এই আর্টিকেলে দুধ চায়ের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
দুধ চা একটি জনপ্রিয় পানীয়, যা প্রায় মানুষ নাস্তার সাথে খেয়ে থাকে। এটা চায়ের তিক্ত স্বাদের সাথে দুধের মিষ্টি যোগ করার কারণে এক ধরণের মনোমুগ্ধকর স্বাদ তৈরি হয়। দুধ চায়ের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে।
সূচিপত্রঃ দুধ চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - একটি সম্পূর্ণ গাইড
দুধ চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
দুধ চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এখন আমরা এই বিষয়টি বিস্তারিত জানবো। দুধ চা আমাদের শরীরে নানাভাবে উপকার করে থাকে। নিম্নে দুধ চা খাওয়ার উপকারিতা গুলো উল্লেখ করা হলো।
দুধ চা যে উপকার করে থাকে
- অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সরবরাহ
- শরীরের শক্তি বৃদ্ধি
- হাড় মজবুত করে
- হজম প্রক্রিয়া সহায়তা
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সরবরাহ - চা পাতায় ক্যাটেচিন এবং পলিফেনলস নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এটি শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে থাকে। এটি ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে, এছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
শরীরের শক্তি বৃদ্ধি - দুধ চায়ে ক্যাফেইন থাকে যার ফলে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে এবং মানসিক সতেজতা নিয়ে আসে। ব্যস্ত দিনের শুরুতে এই চা আপনাকে দ্রুত সতেজ করে তুলতে পারে। দুধে থাকা কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা এবং প্রোটিন বা আমিষ শরীরের শক্তি প্রদান করে।
হাড় মজবুত করে - দুধে ক্যালসিয়াম থাকে, যার ফলে হাড় ও দাঁতের জন্য অনেক উপকারী হয়।নিয়মিত পরিমানমত দুধ চা খেলে হাড় শক্তিশালী হয়।
হজম প্রক্রিয়া সহায়তা - দুধ চা পান করলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হতে পারে। হালকা দুধ চা পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন গ্যাস ও বদহজম কমাতে সাহায্য করে।
দুধ চা যে অপকার করে থাকে
- ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা
- ঘুমের ব্যাঘাত
- উচ্চ ক্যালোরি সরবরাহ
- অ্যাসিডিটির ঝুঁকি
ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা - চায়ে থাকা ট্যানিন শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণে বাধা দিতে পারে। এর ফলে অনেক সময় দুধ চা খাওয়ার মাধ্যমে যে ক্যালসিয়াম গ্রহণ হয়, তা শরীরে ঠিকমতো শোষণ করতে নাও পারে।
ঘুমের ব্যাঘাত - দুধ চায়ে থাকা ক্যাফেইন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। রাতে বেশি দুধ চা পান করলে ঘুম কমতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে অনিদ্রা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
উচ্চ ক্যালোরি সরবরাহ - এই দুধ এবং চিনি মেশানো চা অনেক ক্ষেত্রে উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত হতে পারে।নিয়মিত অতিরিক্ত দুধ চা পানের ফলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে, বিশেষ করে যদি এতে চিনি যোগ করা হয়।
অ্যাসিডিটির ঝুঁকি - চায়ের ক্যাফেইন এবং চায়ের ট্যানিনের কারণে দুধ চা অনেকের জন্য অ্যাসিডিটির কারণ হতে পারে। বিশেষত যদি কেউ এটা খালি পেটে পান করে তাহলে পেটে অ্যাসিড উৎপন্ন হতে পারে।
দুধ চা খেলে কি শরীরে ওজন বাড়ে
দুধ চা খেলে কি শরীরে ওজন বাড়ে এ বিষয়টি জানা আমাদের অনেক জরুরী। কেননা আমরা অনেকেই স্থুল সমস্যায় ভুগি। তো যারা এমনিতেই স্বাস্থ্যবান তাদের শরীরে যদি এটা খেলে ওজন বাড়ে তাহলে অনেক সমস্যা তাই চলুন জেনে নেই দুধ চা খেলে কি শরীরের ওজন বাড়ে, দুধ চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এই প্রবন্ধে।
হ্যাঁ, দুধ চা খেলে শরীরের ওজন বাড়ে। বিশেষ করে যদি চায়ে অতিরিক্ত চিনি এবং সম্পূর্ণ দুধ দিয়ে তৈরি হয়, তাহলে সেটি উচ্চমাত্রার ক্যালোরি হয়ে যায়। ফলে শরীরের ওজন বাড়তে সাহায্য করে। নিম্নে এ বিষয়টি বর্ণনা করা হলো।
- দুধ এবং চিনি মিশ্রিত চা ক্যালোরি বাড়িয়ে দিতে থাকে। নিয়মিত অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ করতে থাকলে তা শরীরে সঞ্চিত হয় এবং ধীরে ধীরে ওজন বাড়ায়।
- অনেকেই দুধ চায়ে বেশি বেশি চিনি খেয়ে থাকেন। এই চিনি একটি সহজ শর্করা, যা দ্রুত শরীরের শোষিত হয় এবং অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ করে। নিয়মিত এই অতিরিক্ত চিনি গ্রহণের ফলে ওজন বাড়তে পারে।
- অনেকেই দিনে তিন থেকে চার বার বা তারও বেশি দুধ চা পান করেন। এই অতিরিক্ত পরিমাণ দুধ চা পান করলে প্রতিদিন শরীরে বাড়তি ক্যালোরি যোগ করে, যা ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
- ক্যাফেইন শরীরের কিছুটা বিপাক বাড়াতে সাহায্য করে, তবে দুধ এবং চিনি মেশানোর চা বিপাক হার কিছুটা হ্রাস করতে পারে। ফলে ক্যালোরি দ্রুত পোড়ে না এবং তা শরীরে সঞ্চিত হয়ে থাকে।
- অনেক সময় দুধ চা পান করলে সাময়িকভাবে ক্ষুধা কমে যেতে পারে, তবে পরে আবার ক্ষুধা বাড়তে পারে, যা অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়িয়ে থাকে।
ওপরে বর্ণিত কারণগুলোর জন্য এভাবে আপনার শরীরে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
কীভাবে দুধ চা পান করলে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব
কীভাবে দুধ চা পান করলে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব এ বিষয়টি জানা খুবই প্রয়োজন। কেননা এতে করে আমাদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি অনেকটাই কমে। সেই সাথে শরীরের ক্ষতির দিকটি কমে উপকারের সম্ভাবনা বেশি হয়। নিম্নে দুধ চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এই আর্টিকেলে কিভাবে দুধ চাপান করলে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব সে বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
- চিনি কম বা বাদ দিয়ে দুধ চা খান।
- সম্পূর্ণ দুধের বদলে স্কিম মিল্ক ব্যবহার করুন, এতে ক্যালোরি কমবে।
- দিনে একবার বা দুইবারের বেশি দুধ চাপ পান থেকে বিরত থাকুন।
- দুধ চায়ের পরিবর্তে সবুজ চা পানের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
আপনি যদি এভাবে চা পানের অভ্যাস গড়ে তোলেন, তাহলে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা খুব কম হবে।
দুধ চা খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা
দুধ চা খাওয়ার ২০ টি উপকারিতা চলুন এ বিষয় সম্পর্কে এখন জেনে নেওয়া যাক। পরিমিতভাবে দুধ চা পান শরীরের বিভিন্ন উপকার করে থাকে। তবে অতিরিক্ত দুধ চা পান করলে কিছু অপকারিতা থাকতে পারে। নিয়ম মেনে পরিমাণমতো পান করাই ভালো দুধ চা খাওয়ার বেশকিছু উপকারিতা রয়েছে। নিম্নে ২০ টি উপকারিতা তুলে ধরা হলো।
- এটি শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে।
- চায়ের পাতায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকার কারণে শরীরে টক্সিন দূর করে।
- এটি হজমে সহায়তা করে।
- মানসিক চাপ কমায়।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- হাড় মজবুত করে।
- শরীরে পানি শোষণ বাড়ায়।
- ঠান্ডা লাগা কমায়।
- শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
- মেজাজ উন্নত করে।
- হৃদরোগ প্রতিরোধ করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
- ত্বক উজ্জ্বল রাখে বা ত্বক এর উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
- ব্রেনের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।
- ক্লান্তি দূর করে।
- স্মৃতিশক্তি উন্নত করে।
- ব্যথা কমায় মাথা ব্যাথা বা মাইগ্রেনের ব্যাথা।
- ফ্লু প্রতিরোধে সহায়ক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ ফ্লু প্রতিরোধ করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
উপরের বর্ণিত এসকল উপকারিতা মানুষের মাঝে লক্ষ্য করা যায়।
দুধ চা খাওয়ার ১৫ টি অপকারিতা
দুধ চা খাওয়ার ১৫ টি অপকারিতা চলুন এ বিষয়ে সম্পর্কে এখন জেনে নেওয়া যাক। দুধ চা খাওয়ার বেশকিছু অপকারিতা ও রয়েছে। বিশেষ করে অতিরিক্ত পরিমাণে যদি দুধ পান করেন তাহলে অনেক ক্ষতি হতে পারে। নিম্নের দুধ চা খাওয়ার ১৫ টি অপকারিতা তুলে ধরা হলো।
- চিনি এবং দুধ মেশইনো চা উচ্চ ক্যালরিযুক্ত, তাই ওজন বৃদ্ধি ঘটে।
- দুধ চা তে ক্যাফেইন থাকার কারণে ঘুমের সমস্যা হয়।
- অ্যাসিডিটি এবং বদহজম হতে পারে, কারণ ক্যাফেইন ও টানিন অনেকের অ্যাসিডিটির কারণ হয়।
- পেটের গ্যাস বা ফোলা ভাব সৃষ্টি হতে পারে।
- চায়ের ক্যাফেইন মূত্রবর্ধক, যা শরীর থেকে পানি বের করে দেয়, তাই ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হতে পারে।
- এই চায়ের ট্যানিন শরীরে পুষ্টি বিশেষ করে ক্যালসিয়াম ও আয়রনের শোষণ ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়।
- অতিরিক্ত ক্যাফে উচ্চ রক্তচাপের কারণ তার দুধ চা খেলে হার্টের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়।
- এটি খেলে আলসারের ঝুঁকি বাড়ে
- কিছু মানুষের জন্য এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হতে পারে।
- এটি রক্তের সরকারের মাত্রা বাড়ায়।
- এটি ডাইবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়
- এটি হরমোনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
- দুধটা অতিরিক্ত খেলে মহিলাদের মধ্যে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হতে পারে।
- দুধ চা অতিরিক্ত সেবনে ত্বকের ক্ষতি করে, কেনোনা এটাতে ক্যাফেইন থাকে বেশি তাই এটি ত্বককে শুষ্ক করে এবং ত্বকের বলিরেখা বাড়ায়। যা বয়সের ছাপ দূরত্ব নিয়ে আসে।
- অতিরিক্ত দুধ চা পানে হাড়ের ক্ষতি করতে পারে। কেনোনা দুধ চায়ে ট্যানিন ক্যালসিয়াম শোষণ কমিয়ে দেয়।
তাই দুধ চা খাওয়ার সময় এ পরিমাণ এবং নিয়ম মেনে পান করা উচিত যে পরিমাণ খেলে শরীরের অপকারিতা গুলো দেখা যাবে না।
আরও পড়ুনঃ আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার সময়
দুধ চা খেলে কি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে
দুধ চা খেলে কি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে এ বিষয়টি এখন আমরা জানবো দুধ চা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এই প্রবন্ধে বিস্তারিত। হ্যাঁ, দুধ চা খেলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। দুধ চায়ে থাকা ক্যাফেইন এবং চায়ের ট্যানিন ঘুমের প্রক্রিয়া বাধা সৃষ্টি করতে পারে। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
- দুধ চায়ে থাকা ক্যাফেইন একটি প্রাকৃতিক উদ্দীপক, যা স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপ্ত রাখে এবং মনকে জাগ্রত রাখে। এটি ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় মেলাটোনিন নামক হরমোনের উৎপাদন হ্রাস করতে পারে। ফলে বিশেষ করে রাতে দুধ চা পান করলে ঘুম আসতে বিলম্ব হয় এবং ঘুমের গভীরতা কমে যেতে পারে।
- যারা নিয়মিত রাতে বা সন্ধ্যার দিকে দুধ চা পান করেন, তাদের মধ্যে অনিদ্রার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। ক্যাফেইন শরীরে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে। যা রাতে স্বাভাবিক ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- দুধ চায়ে থাকা ক্যাফেইন ও চিনি রক্তচাপ এবং হার্টবিট বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে শরীরের উত্তেজনা তৈরি হয় এবং মন শান্ত থাকে না। ফলে ঘুম কম হতে পারে। বিশেষ করে মানসিক চাপ বা উদ্যোগে থাকা ব্যক্তিদের জন্য এটি আরো ক্ষতিকরও হতে পারে।
- দুধ চা পান করলে ঘুমের চক্র বা স্লিপ সাইকেল ব্যাঘাত করতে পারে। এটি গভীর ঘুমে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে থাকে, ফলে ঘুমের গুণমান খারাপ হয় এবং শরীর প্রয়োজনীয় বিশ্রাম পায় না।
- ক্যাফেইন একটি মুত্রবর্ধক, যা শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল বের করতে সহায়তা করে থাকে।অর্থাৎ বারবার প্রসবের প্রয়োজন হয়। তাই দুধ চা পান করার ফলে ঘন ঘন প্রসাবের প্রয়োজন হতে পারে যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
আরও পড়ুনঃ দ্রুত ওজন বাড়ে কি খেলে
কীভাবে দুধ চা পান করলে ঘুমের ব্যাঘাত কমানো যায়
কীভাবে দুধ চা পান করলে ঘুমের ব্যাঘাত কমানো যায় সে সম্পর্কে এখন আমরা বিস্তারিত জানবো।কিভাবে দুধ চা পান করলে ঘুমের ব্যাঘাত কম ঘটবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত নিম্নে আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হলো।
- রাতে দুধ চা পান এড়িয়ে চলতে হবে আপনাকে, এটা আপনি সকালে বা দুপুরে খেতে পারেন।
- আপনি কম ক্যাফেইন যুক্ত চা বেছে নিবেন, কারণ কম ক্যাফেইনযুক্ত চা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় না।
- চিনির পরিমাণ কমাতে হবে, কেনোনা চিনিতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকে যা ঘুমের উপর প্রভাব পড়ে।
উপরিক্ত এই কাজগুলো করলে এবং রাতে দুধ চা পান থেকে বিরত থাকলে রাতের যে ঘুমের সমস্যা বা ঘুমের ব্যাঘাত তা ঘটবে না
বাচ্চাদের কি দুধ চা খাওয়ানো যায়
বাচ্চাদের কি দুধ চা খাওয়ানো যায় চলুন এ বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। বাচ্চাদের দুধ চা খাওয়ানো স্বাস্থ্যকর নয় এবং সেই সাথে এটি এড়িয়ে চলা উচিত। দুধ চায়ে থাকা ক্যাফেইন এবং চায়ের অন্যান্য উপাদান বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত নয়। নিম্নে কি কারনে এগুলো খাওয়ানো যাবে না তা বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
- দুধ চায়ে থাকা ক্যাফেইন বাচ্চাদের স্নায়ুতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে। ক্যাফেইন বাচ্চাদের ঘুমের সমস্যা উদ্বেগ এবং অতিরিক্ত উত্তেজনার কারণ হতে পারে সেইসাথে তাদের মনোযোগ এবং একাগ্রতা কমিয়ে দিতে পারে।
- দুধ চায়ের মধ্যে থাকা ট্যানিন শরীরের ক্যালসিয়াম শোষণে বাধাগ্রস্থ করে থাকে, যা বাচ্চাদের হাড়ের বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। বাচ্চাদের হাড় ও দাঁতের গঠন এবং শক্তির প্রয়োজনে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম প্রয়োজন হয়। তাই বাচ্চাদের দুধ চা এড়িয়ে চলা উচিত।
- বাচ্চাদের পর্যাপ্ত ঘুম স্বাস্থ্যকর বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুধ চায়ে থাকা ক্যাফেইন ঘুমের চক্রে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং তাদের ঘুমের গুণগত মান কমিয়ে দিতে পারে। ঘুম না হলে বাচ্চাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় এবং সেই সাথে শারীরিক ও মানসিক বিকাশের সমস্যা হতে পারে।
- দুধ চায়ে থাকা ক্যাফেইন বাচ্চাদের কোমল পরিপাকতন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এটি বদহজম, গ্যাস এবং অ্যাসিডিটির বাড়িয়ে দিতে পারে।
- দুধ চা খেলে অনেক সময় বাচ্চারা পুষ্টিকর খাবার খেতে চায় না। খিদে কমে যায় এতে শরীরের জন্য পুষ্টির অভাব হতে পারে, যাতে বাচ্চাদের শরীর বিকাশের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
তাই বাচ্চাদের জন্য দুধ চা খাওয়ানোর পরিবর্তে আপনি গরম দুধ, ফলের রস বা হারবাল চা যাতে ক্যাফেইন নেই এগুলো খাওয়াতে পারেন। এগুলো তাদের জন্য স্বাস্থ্যকর এবং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
পরিশেষে বলা যায় উপরের আলোচনা হতে, দুধ চায়ে যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি এটি অতিরিক্ত পানের ফলে অপকারিতাও রয়েছে। তাই আমাদের উচিত পরিমাণ মতো দুধ চা পান করা। যেন আমাদের স্বাস্থ্য সুন্দর ও স্বাভাবিক থাকে।
দুধ চা একটি সুস্বাদু ও মনোমুগ্ধকর পানীয়। এটি আমাদের অতিরিক্ত পরিমাণে পানাহার থেকে বিরত থাকা অনেক ভালো। আমরা যদি পরিমাণ মতো এটি পান করে থাকি তাহলে স্বাস্থ্যের জন্য এটি উপকার করবে না হলে আমাদের স্বাস্থ্য বিভিন্ন ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url