শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের সাথে পুষ্টিকর খাবার এর সম্পর্ক নির্ণয়
শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের সাথে পুষ্টিকর খাবার এই আর্টিকেলে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের ধারণা থেকে শুরু করে শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান, খাবারের প্রয়োজনীয়তা এবং বয়স ভিত্তিক খাদ্য পরিকল্পনা ও সুস্থ খাদ্যভ্যাস গড়ে তোলার কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
শিশুর সুস্বাস্থ্য, মস্তিষ্কের বিকাশ, শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবারের ভূমিকা অপরিসীম। শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্যের গুরুত্ব শুধু দৈহিক বৃদ্ধি নয়, বরং সেই সাথে মানসিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সূচিপত্রঃ শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের সাথে পুষ্টিকর খাবার এর সম্পর্ক নির্ণয়
- শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের সাথে পুষ্টিকর খাবার
- শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের ধারণা
- শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সমূহ
- শিশুর পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা
- শিশুর জন্য পুষ্টিকর খাবারের তালিকা
- শিশুদের বয়স ভিত্তিক খাদ্য পরিকল্পনা
- খাবারের ওপর শিশুর মানসিক প্রভাব
- শিশুর জন্য সুস্থ খাদ্যভ্যাস গড়ে তোলার কৌশল
- শেষ মন্তব্য
শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের সাথে পুষ্টিকর খাবার
শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের সাথে পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব অনেক। এ প্রবন্ধে আপনাদের মাঝে শিশুদের জন্য প্রয়োজনে পুষ্টি উপাদানসমূহ যেমন প্রোটিন, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন ও খনিজ এছাড়াও পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা শিশুদের বয়স ভিত্তিক কেমন খাবার পরিকল্পনার প্রয়োজন এবং খাবারের মানসিক প্রভাব সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ সুস্থ ও সবল জাতি গঠনের মূল চাবিকাঠি। শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের জন্য শিশুদের সঠিক পুষ্টি উপাদান থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। শিশুদের সুষম বৃদ্ধি এবং সেই সাথে মানসিক বিকাশ সবকিছু নির্ভর করে শিশুর সঠিক খাদ্যভ্যাসের ওপর। সুস্থ খাদ্যভ্যাস গড়ে তুললে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ সুন্দরভাবে ঘটে থাকে।
কথায় আছে আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের ক্ষেত্রে প্রতিটি পরিবারের দায়িত্ব ও কর্তব্য তাদেরকে সঠিক পুষ্টিকর খাবার দেওয়া। কেনোনা সঠিক ও পুষ্টিকর খাবার দিলে শিশুর বৃদ্ধি বিকাশ বুদ্ধি সুস্থভাবে তৈরি হয়ে ওঠে। নিম্নে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের সাথে পুষ্টিকর খাবারের যে সম্পর্ক রয়েছে তা বিশদভাবে তুলে ধরা হলো।
শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের ধারণা
শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের ধারণা এ বিষয়টি এখন আপনাদের মাঝে উল্লেখ করা হবে। শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের সাথে পুষ্টিকর খাবার এই আর্টিকেলে এ বিষয়টি নিম্নে আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হলো।
শিশুর বৃদ্ধি বলতে সাধারণত শুধু দেহের দৈর্ঘ্য ওজন বৃদ্ধি এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গঠন বোঝায়। বিকাশ বলতে বোঝায় মানসিক বুদ্ধিভিত্তিক এবং সামাজিক দক্ষতা অর্জন। এ দুটো ক্ষেত্রেই সঠিক পুষ্টি ছাড়া সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই আমাদের একান্ত দায়িত্ব-কর্তব্য বৃদ্ধি ও বিকাশের ক্ষেত্রে সঠিক পুষ্টিকর খাবার দেওয়া।
শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য সঠিক পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব অপরিসীম। স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে শিশুর পুষ্টিকর খাবার অতি প্রয়োজনীয়। শিশু সঠিক সময় সঠিক পুষ্টিকর খাবার পেলে শারীরিক বৃদ্ধির সাথে সাথে তার মানসিক বৃদ্ধি ঘটে। তাই বলা যায় শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের সাথে পুষ্টিকর খাবারের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সমূহ
শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সমূহ চলুন এ বিষয়টি এখন জেনে নেওয়া যাক। এ প্রবন্ধে এখন আমরা এ বিষয়টি বিস্তারিত জানবো। শিশুর দেহ বা শরীর ও মনের বিকাশে কয়েকটি প্রধান পুষ্টি উপাদান বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে থাকে। নিম্নে শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সমূহ উল্লেখ করা হলো।
যে পুষ্টি উপাদান সমূহ আলোচনা করা হবে
- প্রোটিন
- শর্করা
- ভিটামিন ও খনিজ
- চর্বি
- প্রোটিন, এটি দেহের কোষ নির্মাণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রোটিনের ভালো উৎস হচ্ছে মাংস, ডিম, মাছ এবং দুগ্ধচার দ্রব্য।
- শর্করা, এটি শক্তির প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে থাকে। শর্করা পাওয়া যায় মূলত দানাশস্য, আলু ও ফলমূলে।
- ভিটামিন ও খনিজ, ভিটামিন এ সি ডি এবং ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক প্রভৃতি খনিজ উপাদানসমূহ শিশু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও হাড় গঠনে সহায়তা করে থাকে।
- চর্বি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশে ও হরমোন উৎপাদনে এর প্রয়োজনীয়তা অনেক। ভালো চর্বির জন্য আমাদের বাদাম তেল এবং মাছ খেতে হবে।
আরও পড়ুনঃ খালি পেটে গাজর খাওয়ার উপকারিতা
শিশুর পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা
শিশুর পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা অনেক। শিশুর পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজনীয়তা অনেক এ কারণেই যে, একটি শিশু বেড়ে ওঠার জন্য ও মানসিক বিকাশের জন্য পুষ্টিকর খাবার সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেনোনা একটি শিশু যদি পুষ্টিকর খাবার না পায় তাহলে সে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠবে না এবং তার মানসিক বুদ্ধি ও বিকাশও ঘটবে না। নিম্নে শিশুর পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হলো।
- শারীরিক বিকাশের জন্য পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা অনেক। শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি ও শারীরিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ভিটামিন দরকার। সঠিক পুষ্টিগণ শিশুর হাড় ও পেশী মজবুত রাখতে সহায়তা করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য শিশুর পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। শিশুরা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য ভিটামিন সি ই ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার দরকার।
- মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম পাঁচ বছরের মধ্যে শিশুর মস্তিষ্কের উন্নয়ন দূরত্ব ঘটে থাকে। তাই এই সময় শিশুর সঠিক পুষ্টি প্রয়োজন। ওমেগা-৩, ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়োডিন ও ভিটামিন বি১২ সহ নানা উপাদান মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে থাকে।
- মানসিক বিকাশ ও আচরণগত উন্নয়ন জন্য শিশু পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা অনেক। পুষ্টির অভাবে শিশুর আচরণ, মনোযোগ ক্ষমতা ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে। পর্যাপ্ত পুষ্টি শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে।
শিশুর জন্য পুষ্টিকর খাবারের তালিকা
শিশুর জন্য পুষ্টিকর খাবারের তালিকা আমাদের যদি জানা থাকে তাহলে অনেক ভালো হয়। কেনোনা শিশুর পুষ্টিকর খাবার শিশুর বেড়ে ওঠার একটি অন্যতম উপায়। তাই শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের জন্য পুষ্টিকর খাবারের তালিকা জানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে শিশুর জন্য পুষ্টিকর খাবার তালিকা উল্লেখ করা হলো।
পুষ্টি উপদান | উৎস | প্রয়োজনীয়তা |
---|---|---|
ক্যালসিয়াম | দুধ, দই, পনির | হাড় ও দাঁতের জন্য |
ভিটামিন সি | আম, কিউই, লেবু | রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় |
প্রোটিন | ডাল, মাছ, মাংস, ডিম | পেশী বৃদ্ধি |
আয়রন | সবুজ শাক-সবজী, ডাল | রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে |
ওমেগা-৩ | বাদাম, মাছ, চিয়া সিড | মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক |
শিশুদের বয়স ভিত্তিক খাদ্য পরিকল্পনা
শিশুদের বয়স ভিত্তিক খাদ্য পরিকল্পনা চলুন এবার এ বিষয়টি বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের মাঝে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের সাথে পুষ্টিকর খাবারের যে সম্পর্ক রয়েছে তা বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। নিম্নে শিশুর বয়স ভিত্তিক খাদ্য পরিকল্পনা উল্লেখ করা হলো।
যে বয়স ভিত্তিক খাদ্য পরিকল্পনা আলোচনা করা হবে
- ৬ মাস থেকে ২ বছর
- ৩ থেকে ৫ বছর
- ৬ থেকে ১২ বছর
- ছয় মাস থেকে দুই দুই বছর বয়সী শিশুদের জন্য বুকের দুধ, মৃদু শাক-সবজি, ফলের রস, ডাল ইত্যাদি খুবই উপকারী। এ সময় অর্থাৎ ৬ মাস থেকে দুই বছর বয়স পর্যন্ত একটি শিশু মায়ের বুকের দুধ পান করে। শূন্য থেকে ছয় মাস পর্যন্ত মায়ের দুধ পান করানোই ভালো। এরপর থেকে শিশুর জন্য পুষ্টিকর খাবার যেমন মৃদু শাকসবজি, ফলের রস, ডাল ইত্যাদি খাওয়ানো যায়।
- তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের জন্য দুধ এবং শাকসবজি যোগ করা যেতে পারে। দুধে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও আয়রন এগুলো বিদ্যমান থাকে। তাই শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের জন্য এ সকল খাদ্য খুবই প্রয়োজন।
- ছয় থেকে বারো বছর বয়সী শিশুর জন্য প্রোটিন, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন ও খনিজদের সঠিক পরিমাণ থাকা আবশ্যক। কেননা এই সময়ে শিশুরা আরো বেশি শক্তি প্রয়োজন হয় এবং তারা এই সময় থেকে বেড়ে উঠতে থাকে। তাই তাদের সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য বেশি বেশি প্রোটিন জাতীয় শর্করা ও চর্বি ভিটামিন এবং খনিজ এ সকল পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো উচিত।
খাবারের ওপর শিশুর মানসিক প্রভাব
খাবারের ওপর শিশুর মানসিক প্রভাব রয়েছে। সঠিক পুষ্টির অভাবে শিশুরা অন্যমনস্ক, উদ্বেগ, মেজাজ পরিবর্তনের শিকার হতে পারে। এর ফলে শিক্ষাগত উন্নতি ও সামাজিক মেলামেশার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। নিম্নে খাবারের উপর শিশুর মানসিক প্রভাব উল্লেখ করা হলো।
শিশুর মানসিক বিকাশ ও আচরণের উপর খাবারের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব আছে। খাদ্য উপাদান সরাসরি শিশুর মস্তিষ্কের গঠন, স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ ও মেজাজের ওপর প্রভাব ফেলে। শিশুরা যেসব খাবার খায় তা তাদের মানসিক বিকাশ মনোযোগ শেখার ক্ষমতা ও সাধারণ আচরণ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।
শিশুর মানসিক বিকাশ ও আচরণের উপর খাবারের প্রভাব
- বাচ্চাদের মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনে পুষ্টি উপাদান সরবরাহ অপরিহার্য একটি বিষয়। ওমেগা-৩, ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন, আয়োডিন, দস্তা, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন ডি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় উপাদান শিশুদের মস্তিষ্কের উৎপাদনে সহায়তা করে এবং সেই সাথে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়। তাই যদি এ ধরনের খাবার শিশু না পায়, তাহলে মস্তিষ্কের সুস্থ বিকাশ ঘটবে না।
- খাবারের উপাদানগুলো শিশুর মেজাজ ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ শস্য জাতীয় খাবার থেকে পাওয়া কার্বোহাইড্রেট মস্তিষ্কে সেরোটোনিন উৎপাদন বাড়ায়, যা মেজাজ ভালো রাখতে সহায়ক অন্যদিকে ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন শাক-সবজি, বাদাম শিশুকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে থাকে।
- শিশুরা যদি বেশি ফল-মূল, শাক-সবজি, বাদাম এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করে, তাহলে তাদের মনোযোগ ধরে রাখতে এবং পাশাপাশি নতুন বিষয় শিখতে সুবিধা হয়। বিশেষ করে প্রোটিন শিশুদের মধ্যে সেরোটোনিন উৎপাদনে সহায়তা করে, যা মনোযোগ বাড়ায় এবং মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।
- শিশুদের জন্য প্রচুর চিনি প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ এড়িয়ে চলা উচিত। কেনোনা এই খাবারগুলো শিশুদের অতিরিক্ত খাওয়ালে মনোযোগের ঘাটতি, হাইপারঅ্যাক্টিভিটি এবং আচরণগত সমস্যার কারণ হতে পারে। এ ধরনের খাবার শিশুরা তাড়াতাড়ি খেতে আগ্রহ হলেও এতে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করে, যা শিশুর মানসিক অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।
- সুষম খাদ্য শিশুর ঘুমের গুণমান বাড়তে সাহায্য করে থাকে। মানসিক প্রশান্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার ঘুমের মান বাড়ায়। যা শিশুর সামগ্রিক মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন।
শিশুর জন্য সুস্থ খাদ্যভ্যাস গড়ে তোলার কৌশল
শিশুর জন্য সুস্থ খাদ্যভ্যাস গড়ে তোলার কৌশল জানা থাকলে আমাদের অনেক উপকার হয়। কেনোনা তাদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য ও মানসিক বিকাশের জন্য সঠিক খাদ্যভ্যাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিশুর সঠিক খাদ্যভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে একটি শিশু সুন্দর সুস্বাস্থ্য এবং মানসিক দিক থেকে ভালোভাবে বড় হতে থাকবে। নিম্নে শিশুর জন্য সুস্থ খাদ্যভ্যাস গড়ে তোলার কৌশল উল্লেখ করা হলো।
- শিশুকে নিয়মিত সময়মতো খাবার দিতে হবে। যাতে সে খিদে বা খাবারের প্রতি সঠিক ধারণা পায় এভাবে শিশুর পেট ভরা এবং সে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ কমিয়ে ফেলতে পারে।
- শিশুকে নানা ধরনের সাস্থ্যকর খাবারের সাথে পরিচিতি করাতে হবে। সবজি, ফলমন, দানাশস্য এবং প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত করে এমন খাবার তাকে দিনে ও রাতে খাওয়াতে হবে যাতে সে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি পায়।
- পরিবারের সবাই একসঙ্গে বসে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। শিশুরা বাবা মায়ের আচরণ অনুসরণ করে। তাই সুস্থ খাবার খাওয়ার সময় তাদের সামনে বসে খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
- খাবারের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করতে খাবার সাজিয়ে দিতে হবে যেমন ফল দিয়ে বিভিন্ন চিত্র আঁকা এবং সবজি দিয়ে বিভিন্ন ডিজাইন করে খাওয়ালে, খাবার প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়তে পারে।
- শিশুদের জাঙ্ক ফুট খাবার থেকে বিরত রাখতে হবে। এর পরিবর্তে ঘরে তৈরি খাবার দিতে হবে।শিশুদের মাঝে মাঝে তাদের পছন্দের খাবার খেতে দিতে হবে, তবে স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে প্রাধান্য দিতে হবে।
- শিশুদের খাদ্যভ্যাস পরিবর্তন করতে হলে তাদের প্রশংসা করতে হবে। এটি তাদেরকে ভালো অভ্যাস বজায় রাখতে উৎসাহিত করে।
শেষ মন্তব্য
উপরের আলোচনা হতে বোঝা যায় যে, শিশুর বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের সাথে পুষ্টিকর খাবারের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। তাই শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে পুষ্টিকর খাবার তাদের গ্রহণ করানো উচিত।
শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশে পুষ্টিকর খাবারের গুরুত্ব অনেক বা অপরিসীম। একটি সুস্থ জাতি গঠনের ক্ষেত্রে শিশুর সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করার দায়িত্ব, সমাজের প্রতিটি সদস্যের। আসুন সবাই আমরা শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য পুষ্টিকর খাবার দেয়।
জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url