রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয়-সম্পর্কে জানুন

রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয় এই আর্টিকেলে এখন আপনারা জানতে পারবেন রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে আমাদের কি করতে হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত। এছাড়া আরো জানতে পারবেন কোলেস্টেরল কি এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করার ঘরোয়া টিপস সম্পর্কে।

রক্তে-কোলেস্টেরল-বেড়ে-গেলে-করণীয়কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে আমাদের কিছু কাজ করতে হয়। অর্থাৎ আমাদের কিছু করণীয় থাকে। এসকল করনীয় কাজগুলো যদি আমরা ঠিকঠাক মতো করতে পারি, তাহলে আমাদের এই কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

পেজ সূচিপত্রঃ রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয়-সম্পর্কে জানুন

রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয়

রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয় এই আর্টিকেলে আপনারা কোলেস্টেরলের বিভিন্ন প্রকারভেদ এবং সেই সাথে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কয়েকটি কারণ জানতে পারবেন। আরো জানতে পারবেন কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করার কিছু কার্যকরী উপায়, সেইসাথে এটি নিয়ন্ত্রণ করার চিকিৎসা ও ওষুধ সম্পর্কে। আশা করি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

বর্তমান জীবনযাত্রার অনিয়মিত ও অপুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। এটি এখন সাধারন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট এ্যাটাক, ও স্ট্রোকের মতো গুরুতর রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে কিছু সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও সঠিকভাবে নিয়ম-কানুন মেনে চললে ও এর প্রতিকার গ্রহণের মাধ্যমে কোলেস্টেরল সহজে নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব।

কোলেস্টেরল কি সে সম্পর্কে জানুন

কোলেস্টেরল কি সে সম্পর্কে জানুন। কোলেস্টেরল শরীরে রক্তের এমন একটি বিষয় যে সম্পর্কে জানা আমাদের একান্ত প্রয়োজন। রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয় এই আর্টিকেলে এখন আপনাদের মাঝে কোলেস্টেরল কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। নিম্নে কোলেস্টেরল কি সেই সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো।

  • কোলেস্টেরল হলো এমন এক ধরনের চর্বি জাতীয় পদার্থ, যা রক্তে প্রোটিনের সঙ্গে মিশে লিপোপ্রোটিন তৈরি করে থাকে। এটি মূলত লিভারে উৎপন্ন হয় এবং সেই সাথে শরীরের কোষের কাজকর্ম সচল রাখতে সাহায্য করে থাকে।
  • অর্থাৎ এ থেকে বোঝা যায় যে কোলেস্টেরল এক ধরনের চর্বি। এখান থেকে আরও বোঝা যায় যে, এটি রক্তের সঙ্গে মিশিয়ে অর্থাৎ রক্তের যে প্রোটিন সেই সঙ্গে মিশে থাকে। আর আমাদের শরীরের লিভার বলতে গেলে যকৃৎ বোঝায়।

আরও পড়ুনঃ পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়

কোলেস্টরলের বিভিন্ন প্রকারভেদ

কোলেস্টরলের বিভিন্ন প্রকারভেদ সম্পর্কে চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। কোলেস্টরল মূলত দুইটি ভাগ রয়েছে, তবে কিছু ক্ষেত্রে আরেকটি লক্ষ্য করা যায়। রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয় এই প্রবন্ধে এখন আপনাদের মাঝে এ বিষয়টি তুলে ধরা হবে। নিম্নে কোলেস্টেরলের বিভিন্ন প্রকারভেদ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

কোলেস্টরলের বিভিন্ন প্রকারভেদ

  • ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল ( HDL ); হাই-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন ( HDL ) ভালো কোলেস্টেরল নামে পরিচিত। এটি রক্তনালী থেকে অতিরিক্ত চর্বি সরিয়ে লিভারে পৌঁছে দিয়ে থাকে।
  • খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল ( LDL ); লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন ( LDL ) খারাপ কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত। এটি রক্তনালীর দেয়ালে জমে ধমনীর গতি বাধাগ্রস্ত করে থাকে।
  • মোট কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড ( TRIGLYCERIDES ); মোট কোলেস্টেরল হলো এইচডিএল ( HDL ) ও এলডিএল ( LDL ) এর সমষ্টি। আর এই ট্রাইগ্লিসারাইড হলো এক ধরনের চর্বি, যা উচ্চ কোলেস্টেরল ঝুঁকি বাড়িয়ে থাকে।

কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কয়েকটি কারণ

কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কয়েকটি কারণ সম্পর্কে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক। কোলেস্টেরল বৃদ্ধির বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয় এই প্রবন্ধে এখন আমরা এ বিষয়টি আলোচনা করবো। নিম্নে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হলো।
কোলেস্টেরল-বৃদ্ধির-কয়েকটি-কারণ
কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কয়েকটি কারণ

  • ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন করা।
  • অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা হওয়া।
  • অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া।
  • বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপ।
  • শারীরিক পরিশ্রম না করা।
  • জিনগত বিভিন্ন কারণ।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের কার্যকরী উপায়

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের কার্যকরী উপায় সম্পর্কে এখন আপনাদের মাঝে আলোচনা করা হবে। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের জন্য খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে ব্যায়াম ও মানসিক স্থিরতা বজায় রাখতে হবে। রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে করণীয় এই আর্টিকেলে এখন আপনারা এ বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। নিম্নে এ বিষয়টি তুলে ধরা হলো।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের কার্যকরী উপায়

  • খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনঃ- ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন- ওটস, শাক-সবজি খেতে হবে, চর্বি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিহার করতে হবে। ফল-মূল খেতে হবে। ওমেগা-৩, ফ্যাটি এ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমনঃ সামুদ্রিক মাছ, বাদাম এগুলো খেতে হবে। অন্যান্য তেল ব্যবহার কমাতে হবে এবং অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে হবে।
  • নিয়মিত ব্যায়ামঃ- প্রতিদিন অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ধরে হাঁটতে হবে বা সাইকেল চালাতে হবে। বিভিন্ন ধরনের যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন করতে হবে।
  • ধুমপান ও অ্যালকোহল ত্যাগঃ- ধূমপান ও অ্যালকোহল রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। তাই ধুমপান ও অ্যালকোহল ত্যাগ করতে হবে।
  • মানসিক চাপ কমানোঃ- স্ট্রেস কোলেস্টেরল বাড়ায়। তাই নিয়মিত মেডিটেশন ও পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। যেন কোলেস্টেরল না বাড়ে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণঃ- স্থূলতা কোলেস্টেরলের অন্যতম কারণ। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরী বিষয়।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ঘরোয়া টিপস

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ঘরোয়া টিপস সম্পর্কে আমাদের যদি জানা থাকে, তাহলে আমরা ঘরে বসেই খুব সহজেই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। তাই আসুন জেনে নেওয়া যাক কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের ঘরোয়া টিপসগুলি। নিম্নে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ঘরোয়া টিপস তুলে ধরা হলো।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে ঘরোয়া টিপস

  • রোজ অর্থাৎ প্রতিদিন এক কোয়া করে কাঁচা রসুন খেলে কোলেস্টেরল কমে যায়।
  • করোলা ও আমলকির রস এগুলো শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে থাকে।
  • সবুজ চায়ে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে থাকে।
  • মেথি রাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে উপকার হয়।
উপরোক্ত ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো অনুসরণ করলে আপনি খুব সহজে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসা ও ঔষধ

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসা ও ঔষধ সম্পর্কে চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে কিছু চিকিৎসা রয়েছে, যা সঠিক মাত্রায় সেবন করলে দ্রুত কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নিম্নে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের চিকিৎসা ও ওষুধ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
কোলেস্টেরল-নিয়ন্ত্রণে-চিকিৎসা-ও-ঔষধ
যদি খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের পরে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না আসে, তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। স্ট্যাটিনস বা অন্য ওষুধের সাহায্যে এলডিএল ( LDL ) কমানো সম্ভব।

ফাইব্রেটস যেমন জেমফাইব্রোজিল, ফেনোফাইব্রেট এসকল ওষুধ ছাড়া, আরও ওষুধ রয়েছে যেমনঃ বাইল অ্যাসিড সিকুয়েস্ট্রান্টস, উদাহরণ স্বরূপ- কোলেসটিপল, কোলেসেভেলাম। ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।

শেষ মন্তব্য

উপরের আলোচনা হতে বোঝা যায় যে, কোলেস্টেরল একটি নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য সমস্যা, তবে অবহেলা করলে তা গুরুতর হতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীর চর্চা করা উচিত। এর ফলে রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখতে সবচেয়ে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

আপনার যদি রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়, তবে আপনি যদি উপরের নিয়ম কানুন গুলো সঠিকভাবে মেনে চলেন, তাহলে অবশ্যই আশানুস্বরূপ ফল পাবেন বলে আশা করা যায়। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url