ডিমের কুসুমে কি থাকে - ডিম সম্পর্কে এই ৭ তথ্য কি জানতেন
ডিমের কুসুমে কি থাকে - ডিম সম্পর্কে এই ৭ তথ্য কি জানতেন এই প্রবন্ধে আপনারা জানতে পারবেন ডিমের কুসুম সম্পর্কে যাবতীয় সবকিছু। অর্থাৎ আপনি ডিমের কুসুমে কি পুষ্টিগুণ আছে এবং এর কিছু উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ডিম পুষ্টির এক অনন্য উৎস। বিশেষত ডিমের কুসুমে রয়েছে প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা শরীরের সঠিক কার্যকারিতার জন্য খুবই প্রয়োজন। এই প্রবন্ধে ডিম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা ও নতুন তথ্য আপনাদের মাঝে তুলে ধরা হয়েছে।
পেজ সূচিপত্রঃ ডিমের কুসুমে কি থাকে - ডিম সম্পর্কে এই ৭ তথ্য কি জানতেন
- ডিমের কুসুমে কি থাকে
- ডিম সম্পর্কে ৭ টি তথ্য
- ডিমের কুসুমে কোন কোন উপাদান বিদ্যমান
- ডিমের কুসুমের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ
- ডিম খাওয়ার নানা উপকারিতা
- ডিম খাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা
- ডিম সংরক্ষণের সঠিক উপায়
- কত বয়সের বাচ্চাদের ডিম খাওয়ানো যাবে
- বাচ্চাদের যেভাবে ডিম খাওয়ানো যাবে
- যে লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনার ডিমে অ্যালার্জি
- শেষ মন্তব্য
ডিমের কুসুমে কি থাকে
ডিমের কুসুমে কি থাকে আসলে একটি গুরুত্বপূর্ণ জানার বিষয়। ডিমের কুসুমে কি থাকে! এর পুষ্টিগুণগুলো কি আমাদের শরীরে অনেক কাজে লাগবে, না এর পুষ্টিগুণগুলো আমাদের শরীরের খারাপ দিক বয়ে আনবে, এই ব্যাপারে বিস্তারিত আপনাদের মাঝে এই প্রবন্ধে আলোচনা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি পরে আপনাদের অনেক ভালো লাগবে এবং অনেক উপকৃত হবেন।
ডিমের কুসুমে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি গুনাগুন বিদ্যমান। যে সকল পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে তা শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ পর্যন্ত খেতে পারে এবং এতে করে শিশু এবং বয়স্ক মানুষের প্রোটিনের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাব পূরণ করে। নিম্নের বিষয়গুলো থেকে ধারাবাহিকভাবে আপনারা ডিম সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে পারবেন।
ডিম সম্পর্কে ৭ টি তথ্য
ডিম সম্পর্কে ৭ টি তথ্য আসুন এবার জেনে নেই। ডিমের কুসুমে কি থাকে এই প্রবন্ধে এখন আপনারা জানতে পারবেন ডিম সম্পর্কে নতুন সাতটি সুন্দর সুন্দর তথ্য। নিম্নে ডিম সম্পর্কে সাতটি তথ্য আপনাদের মাঝে এখন উল্লেখ করা হলো।
ডিম সম্পর্কে ৭ টি তথ্য-
- ডিম কুসুমের কোলেস্টেরল হার্টের জন্য ক্ষতিকারক নয় বরং তা "গুড কোলেস্টেরল" বাড়ায়।
- রান্নার পদ্ধতির উপর নির্ভর করে ডিমের পুষ্টিগুণ কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।
- প্রতিদিন একটি করে ডিম খাওয়া শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- ডিমের কুসুমে উপস্থিত কোলিন স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।
- ঠান্ডা জায়গায় ডিম সংরক্ষণ করলে তা দীর্ঘ সময় সতেজ থাকে।
- অর্গানিক ডিমের পুষ্টিগুণ সাধারণ ডিমের চেয়ে বেশি।
- কুসুমে থাকা লুটেইন চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
ডিমের কুসুমে কোন কোন উপাদান বিদ্যমান
ডিমের কুসুমে কোন কোন উপাদান বিদ্যমান চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক। ডিমের কুসুমে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। ডিমের কুসুমে কি থাকে এই প্রবন্ধে এখন আমরা এ বিষয়টি বিস্তারিত জানবো। নিম্নে এ ডিমের কুসুমে কোন কোন উপাদান বিদ্যমান সে সম্পর্কে তুলে ধরা হলো।
ডিমের কুসুম পুষ্টিতে ভরপুর একটি খাদ্য। এতে রয়েছে-
- ভিটামিন "এ", "ডি", "ই", "কে"- চুল, ত্বক, ও হাড়ের জন্য উপকারী।
- লুটেইন ও জেক্স্যানথিন- চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
- আয়রন, জিঙ্ক, ফসফরাস- রক্ত গঠনে সহায়ক।
- কোলিন- মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় সহায়ক।
- প্রোটিন- পেশি গঠনে সহায়ক।
- চর্বি- প্রাকৃতিক ভালো চর্বি।
ডিমের কুসুমের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ
ডিমের কুসুমের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক। কি পরিমান পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই ডিমের কুসুম চলুন আমরা বিস্তারিত জেনে নেই। ডিমের কুসুমে কি থাকে এই প্রবন্ধে এখন আমরা এ বিষয়টা আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করবো। নিম্নে এ সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো।
প্রতিটি ডিমে প্রায় ৭০ ক্যালোরি থাকে, যার বেশিরভাগ ক্যালোরি কুসুম থেকে আসে। একটিমাত্র ডিমের কুসুমে আছে-
- ক্যালোরি- ৫০-৫৫
- প্রোটিন- ২.৫ গ্রাম
- চর্বি- ৪-৪.৫ গ্রাম
- কোলিন- দৈনিক প্রয়োজনের প্রায় ২৫%
- ভিটামিন ডি- প্রাকৃতিক সূর্যালোকের পর অন্যতম উৎস।
ডিম শিশুদের জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার। এতে রয়েছে-
- কোলিন, যা মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে
- ভিটামিন এ, ডি, এবং বি১২
- প্রোটিন
ডিম খাওয়ার নানা উপকারিতা
ডিম খাওয়ার নানা উপকারিতা গুলো এবার আমরা বিস্তারিত জেনে নেব। ডিম খাওয়ার নানা ধরনের উপকারিতা আমাদের শরীরের মাঝে দেখা যায়। ডিম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। নিয়মিত এই খাবার গ্রহণের মাধ্যমে আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকার দেখা যায়। নিম্নে ডিম খাওয়ার নানা উপকারিতা গুলো উল্লেখ করা হলো।
ডিম খাওয়ার নানা উপকারিতা-
- মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়- কোলিন ও ভিটামিন "বি১২" মানসিক কার্যকারিতা উন্নত করে থাকে।
- ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী- ভিটামিন ই ও বায়োটিন চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ- ব্রেকফাস্টে ডিম খেলে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে।
- শক্তি জোগায়- প্রোটিন ও ফ্যাট শরীরে দ্রুত এনার্জি যোগায়।
ডিম খাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা
ডিম খাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা আমাদের জন্য জরুরী। তাই ডিম খাওয়ার সময় যে সতর্কতা থাকতে হবে সে সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। আসুন জেনে নেই ডিম খাওয়ার সময় যে সর্তকতা গুলো আমাদের অবলম্বন করা উচিত। নিম্নে ডিম খাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা উল্লেখ করা হলো।
ডিম খাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা-
- ডিমের সঠিক রান্নার সময় নিশ্চিত করা প্রয়োজন। অর্থাৎ (অর্ধসিদ্ধ ডিম কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক হতে পারে)।
- যাদের ডিমে অ্যালার্জি রয়েছে, তাদের ডিম এড়িয়ে চলা উচিত।
- অতিরিক্ত তেল বা মসলা দিয়ে ডিম রান্না না করাই ভালো।
বিঃদ্রঃ- "যদি বাচ্চার ডিম বা অন্য কোনো খাবারে অ্যালার্জি থাকার পারিবারিক ইতিহাস থাকে, তবে ডিম খাওয়ানোর আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।"
ডিম সংরক্ষণের সঠিক উপায়
ডিম সংরক্ষণের সঠিক উপায় রয়েছে। এই উপায় গুলো চলুন এখন আমরা জেনে নেই। নিম্নে ডিম সংরক্ষণে সঠিক উপায় গুলো তুলে ধরা হলো।
ডিম সংরক্ষণের সঠিক উপায়-
- ফ্রিজে রাখার সময় ডিমের স্পর্শে অন্য খাবার রাখবেন না।
- ঠান্ডা স্থানে বা ফ্রিজে ৪°C তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করবেন।
- ডিমের খোসা ফাটলে তা দ্রুত ব্যবহার করবেন।
কত বয়সের বাচ্চাদের ডিম খাওয়ানো যাবে
কত বয়সের বাচ্চাদের ডিম খাওয়ানো যাবে এবার আমরা এ বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। বাচ্চাদের ডিম খাওয়ানো নিয়ে পুষ্টিবিদ এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সাধারণত নিম্নলিখিত নির্দেশনা দিয়ে থাকেন-
ডিম খাওয়ানোর বয়স-
- ৬ মাসের পর- বাচ্চার বয়স ৬ মাস পার হলে তার বাড়তি খাবার হিসেবে সলিড খাবার দেওয়া শুরু করা যায়। এই সময় ডিমের কুসুম (হালকা সেদ্ধ অবস্থায়) খাওয়ানো যেতে পারে, কারণ এটি সহজে হজম হয় সেই সাথে অ্যালার্জির ঝুঁকিও কম।
- ১ বছর বয়সের পর- ১ বছর বয়সের পর পুরো ডিম অর্থাৎ (সাদা অংশসহ) খাওয়ানো যেতে পারে, যদি অ্যালার্জি না থাকে।
বাচ্চাদের যেভাবে ডিম খাওয়ানো যাবে
বাচ্চাদের যেভাবে ডিম খাওয়ানো যাবে এ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান থাকা অনেক প্রয়োজন। কেননা এ সম্পর্কে যদি আমাদের জানা না থাকে, তাহলে আমাদের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বা বাচ্চার খাওয়ানোর ক্ষেত্রে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হতে পারি। তাই আসুন জেনে নেই বাচ্চাদের যেভাবে ডিম খাওয়ানো যাবে।
কিভাবে ডিম খাওয়াবেন-
- ডিম ভালোভাবে সেদ্ধ করে দিন। পুরোপুরি সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত ডিম এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার ঝুঁকি থাকে।
- প্রথমে অল্প পরিমাণে খাওয়াবেন (যেমন এক চা-চামচ কুসুম) এবং ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়াবেন।
- নতুন খাবার হিসেবে ডিম খাওয়ানোর পর ২-৩ দিন লক্ষ করুন, কোনো অ্যালার্জি বা প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে কিনা।
যে লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনার ডিমে অ্যালার্জি
যে লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনার ডিমে অ্যালার্জি আছে। ডিম একটি খুবই পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু খাবার। কমবেশি সব বয়সের মানুষই ডিম খেয়ে থাকে। কিন্তু অনেকের ডিমে অ্যালার্জি হতে পারে। ডিম খাওয়ার পর কোন লক্ষণগুলো থাকলে বুঝতে পারবেন যে আপনার ডিমে অ্যালার্জি আছে। চলুন এ বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
অ্যালার্জির বেশ কিছু লক্ষণ-
ডিমের প্রতি অ্যালার্জি থাকলে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে-
- ত্বকে র্যাশ বা চুলকানি
- বমি বা ডায়রিয়া হওয়া
- শ্বাসকষ্ট হওয়া
"এমন কিছু হলে সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।"
শেষ মন্তব্য
পরিশেষে এ কথা আমরা বলতে পারি যে ডিম একটি স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার। তাই প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় একটি ডিম অনেক উপকার আমাদের বয়ে নিয়ে আসবে। তবে অবশ্যই এটার সঠিক মাত্রা এবং খাওয়ার সঠিক নিয়মকানুন গুলো আমাদের মনে রাখতে হবে।
ডিম এবং ডিমের কুসুম অত্যন্ত উপকারি একটি খাবার। এ খাবার শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ নির্দ্বিধায় খেতে পারে। এর পুষ্টিগুণ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে সঠিক উপায়ে সংরক্ষণ এবং গ্রহণ করলে এর সুফল বেশি পাওয়া যায়।
জিনেউস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url